কমলালেবু থেকে সাপের বিষের প্রতিষেধক আবিষ্কার করেছেন ভারতের এক গবেষক। ওই গবেষকের নাম শুভময় পান্ডা। এই অধ্যাপক বলছেন, কমলালেবুর মধ্যে রয়েছে সর্পপ্রতিষেধকের গুণ। কমলালেবুর মধ্যে থাকা হেসপেরেটিন কাজে লাগিয়ে অ্যান্টি ভেনাম সিরাম বা এভিসের সঙ্গে সংযোগ ঘটিয়ে প্রতিষেধক তৈরি হতে পারে গেছোবোড়া বা চন্দ্রবোড়া প্রজাতির সাপের কামড়ের।
Advertisement
চন্দ্রবোড়া, গেছোবোড়া বা বাঁশবোড়া সাপের বিষ হিমোটক্সিন প্রকৃতির। কামড়ের সঙ্গে সঙ্গে মানবদেহের টিসুগুলোকে দ্রুত ধ্বংস করে দেয়। রক্ত থকথকে জেলির মতো হয়ে যায়। এতে কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। ক্ষতস্থানে ধরে পচন। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে এভিএস ইঞ্জেকশন দিলেও তা অধিকাংশ সময়ে খুব একটা কার্যকর হয় না। এই সাপের বিষের প্রতিষেধকই লুকিয়ে রয়েছে কমলালেবুর মধ্যে।
ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, কলকাতায় বেঙ্গল কেমিক্যাল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এ রাজ্যে ২০০৯ সালের পর থেকে এভিএস তৈরি করা হচ্ছে না। ‘অ্যান্টি ভেনাম সিরাম’ বা এভিএস আনা হচ্ছে তামিলনাড়ুর মহাবলীপুরমের একটি সংস্থা থেকে। তারা ওখানকার সাপের বিষ থেকে এভিএস তৈরি করছে, যা পশ্চিমবঙ্গে সাপের কামড়ে ঠিকঠাক কাজ করছে না। এ রাজ্যের সাপের বিষ ও তামিলনাড়ুর সাপের বিষের মধ্যে রাসায়নিক দিক থেকে পার্থক্য রয়েছে। তাই এলাকাভিত্তিক এভিএস তৈরি করা দরকার বলে অনেকদিন ধরেই দাবি জোর দাবি জানিয়ে আসছেন গবেষকরা।
অধ্যাপক শুভময় বলেন, এ রাজ্যে গবেষণা করে এভিএস তৈরি হলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন। কারণ এখনও এ রাজ্যে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাপের কামড়ে মৃত্যু। সাপের কামড়ের মধ্যে চন্দ্রবোড়া ও গোখরোর বিষেই প্রধানত মৃত্যু হয়। বাংলায় এদেরকে গেছোবোড়া বা বাঁশবোড়া বলা হয়। বোড়া প্রজাতির সাপের বিষের চরিত্র একই রকমের হয়। এই সাপের বিষে সিরিন প্রোটিএইচ নামে রাসায়নিক থাকে। সিরিন প্রোটিএইচের প্রতিষেধক কমলালেবুর মধ্যে থাকা হেসপেরোটিন। এটা ডকিং পদ্ধতিতে সাপের বিষের রাসায়নিকটিকে নিষ্ক্রিয় করতে পারে।
Advertisement
এসআর/এমএস