দেশজুড়ে

শৈলকুপায় সংঘর্ষের ঘটনায় পুরুষ শূন্য গ্রাম

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার দেবতলা গ্রামের স্থানীয় আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দিগনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান পান্না খান ও আরেক গ্রুপের সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এবং জেলা পরিষদ সদস্য মনোয়ার হোসেন মালিতা। এরা দুজনেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা।

Advertisement

সামাজিক আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার (৬ মার্চ) সকালে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের বেশিরভাগই মনোয়ার হোসেন মালিতার কর্মী-সমর্থক। আহতরা বর্তমানে শৈলকুপা ও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় মনোয়ার হোসেন মালিতার কর্মী আহত সুরাপ মালিতা বাদী হয়ে শৈলকুপা থানায় ৮৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলা নং-০৭, তাং-০৬/০৩/১৯। পরে মনোয়ার হোসেন মালিতার প্রতিপক্ষ পান্না খানের কর্মী নেকবার মণ্ডল বাদী হয়ে শৈলকুপা থানায় ৩৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাত করে আরেকটি পাল্টা মামলা করেন। মামলা নং-০৮, তাং-০৬/০৩/১৯।

পাল্টাপাল্টি মামলার ঘটনায় গ্রেফতার আতঙ্কে দেবতলা গ্রাম বর্তমানে পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। এদিকে পান্না খানের কর্মী নেকবার মণ্ডলের দায়েরকৃত পাল্টা মামলায় জরিপ বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন মালিতার নাম রয়েছে। তাকে ১২ নং আসামি করা হয়েছে। অথচ জরিপ বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংঘর্ষের ঘটনার দিন তিনি সকাল ৯ থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত কলেজে উপস্থিত ছিলেন। হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর রয়েছে।

সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত না থাকলেও এই সহকারী অধ্যাপকের নামে মামলা করায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী জানান, হেলাল মালিতা শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নিয়ামত আলী মালিতার ছেলে। এলাকায় তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তাছাড়াও তিনি চাকরি সুবাদে দীর্ঘদিন ধরে শৈলকুপায় অবস্থান করেন। গ্রাম্য দলাদলিতে তার কোনো যোগসাজস নেই।

Advertisement

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মনোয়ার হোসেন মালিতা জানান, ৬ মার্চ তাদের কর্মী-সমর্থকদের উপর সাবেক চেয়ারম্যান পান্না খানের সন্ত্রাসী বাহিনী অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১৫ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। সেই মামলা কাউন্টার হিসেবে প্রতিপক্ষরাও একটি মামলা করেছে। ওই মামলায় যাদের আহত দেখানো হয়েছে, তাদের কেউই আহত হয়নি। মূলত তারাই হামলা চালায়। আর মামলায় যাদের আহত দেখানো হয়েছে, তাদের বেশিরভাগ লোকই হাসপাতালে ভর্তি পর্যন্ত হয়নি। যা কিনা হাসপাতালের ভর্তি রেজিস্ট্রার চেক করলেই সব সত্যতা বেরিয়ে আসবে।

এ বিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান পান্না খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

শৈলকুপা থানার ওসি কাজী আয়ুবুর রহমান জানান, দেবতলা গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেফতারে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। পরবর্তীতে যাতে আর কোন ধরনের আইন-শৃঙ্খখলা পরিস্থিতির অবনতি না হয়, সেজন্য ওই গ্রামে পুলিশের নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/জেএইচ

Advertisement