প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারি-বেসরকারি সংস্থাসহ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগামীতেও যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলা ও এর ঝুঁকিহ্রাস করতে সক্ষম হবো।
Advertisement
আগামীকাল রোববার জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
প্রতিবছরের মতো এবারও দেশব্যাপী ১০ মার্চ ‘জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস ২০১৯’ পালিত হবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতি, হ্রাস করবে জীবন ও সম্পদের ঝুঁকি’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে ১৯৭২ সালে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) গঠন করেন। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে প্রাণিসম্পদ রক্ষার জন্য দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে তৈরি করেছিলেন ‘মুজিব কিল্লা’।
Advertisement
আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সাল থেকে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচির ওপর গুরুত্বারোপ করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সবার উন্নয়ন কর্মসূচিতে দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস কার্যক্রম সম্পৃক্ত করেছি। বিগত ১০ বছরে সারাদেশে ৩ হাজার ৮৫১টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, ২৩০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র এবং ১৭ হাজার ৮৩০টি ব্রিজ/কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে ২২০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, ৪২৩টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, ৬৬টি ত্রাণ গুদাম, ৮ হাজার ৩৫০ কিলোমিটার মাটির রাস্তা এইচবিবিকরণ ও ১৩ হাজার ব্রিজ/কালভার্ট নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।’
এছাড়াও দেশব্যাপী ৫৫০টি মুজিব কিল্লা সংস্কার ও নির্মাণ করা হচ্ছে। ভূমিকম্প মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় উদ্ধার সরঞ্জাম ক্রয় করা হয়েছে। আমরা একটি কার্যকর ও শক্তিশালী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে সময়োপযোগী আইন, বিধি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ২০১৫-৩০ এর দুর্যোগ সম্পর্কিত ধাপসমূহ বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা ব-দ্বীপ পকিল্পনা ২১০০ গ্রহণ করেছি। দুর্যোগে বিপদ সংকেত পদ্ধতি, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, ঝুঁকিহ্রাস, প্রস্তুতি, সাড়াদান, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ, পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন ইত্যাদি কার্যক্রমে আমাদের সরকার তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।
তিনি বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় জনসচেতনতা এবং মাঠ পর্যায়ে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়সহ অন্যান্য দুর্যোগ মোকাবেলা বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। উপকূলীয় জেলাসমূহে ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক গঠন করার পাশাপাশি ৬২ হাজার প্রশিক্ষিত নগর স্বেচ্ছাসেবক গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
Advertisement
ইতোমধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট শহরে প্রায় ৩২ হাজার নগর স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তা ও দৈনন্দিন আবহাওয়া বার্তা জানতে মোবাইলে ১০৯০ নম্বরে (টোল ফ্রি) আইভি আর পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত ভয়াবহ বন্যা, ঘূর্ণিঝড়-সিডর, আইলা, ভূমিধস, বজ্রপাত, শৈত্যপ্রবাহ ইত্যাদি দুর্যোগ আমরা সফলতার সঙ্গে মোকাবেলা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী ‘জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস ২০১৯’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।
এফএইচএস/জেএইচ