চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বঙ্গবন্ধু চেয়ার পদে উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর দায়িত্ব নেয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির আট সিনেট সদস্য।
Advertisement
তাদের দাবি, নিয়ম না মেনে ক্ষমতা ও পদ-পদবিকে ব্যবহার করে উপাচার্য নিজেই নিজেকে এই পদে নিয়োগ দিয়েছেন। যার মাধ্যমে ক্ষুণ্ন করেছেন এই চেয়ারের মর্যাদা। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু চেয়ার নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক নিরসনে আচার্য ও রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী সিনেট সদস্যরা হলেন- অধ্যাপক ড. রাহমান নাসির উদ্দিন, অধ্যাপক ড. কাজী এস এম খসরুল আলম কুদ্দুসী, অধ্যাপক ড. অলক পাল, অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক, অধ্যাপক এস এস মনিরুল হাসান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর, অধ্যাপক সিরাজ-উদ-দৌল্লাহ এবং মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেল।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বঙ্গবন্ধু চেয়ার পদে নিয়োগের নীতিমালা ও ১৯৭৩ সালের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্টের তোয়াক্কা না করে নিজের পদ, পদবি ও ক্ষমতাকে ব্যবহার করে উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী নিজেই এ চেয়ারে নিজেকে নিয়োগ দিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি বঙ্গবন্ধু চেয়ারের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছেন এবং এ চেয়ারে বসার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন।
Advertisement
বিবৃতিতে জানানো হয়, বঙ্গবন্ধু চেয়ার পদে নিয়োগের প্রধান দুই শর্ত (একাধারে ২০ বছর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গবেষণা এবং আন্তর্জাতিক জার্নালে কমপক্ষে ১০টি প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশ করা) উপাচার্য পূরণ করেননি বলেই মনে করেন সিনেট সদস্যরা।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট-১৯৭৩-এর ধারা ২৬ (এন) অনুযায়ী, যেকোনো গবেষণা সংশ্লিষ্ট পদে নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশ প্রয়োজন। অথচ এ বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে কোনো ধরনের আলোচনা হয়নি।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, এ পদে নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি-নির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট সভার অনুমোদন আবশ্যক। অথচ এ বিষয়ে সিন্ডিকেট সভায় কোনো অনুমোদন নেয়া হয়নি। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় কেবল বঙ্গবন্ধু চেয়ার পদে নিয়োগের নীতিমালা অনুমোদন করা হয়েছে। তবে সভায় নিয়মনীতি ও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় দুইজন সিন্ডিকেট সদস্য ভিন্নমত দেন। এ দুইজনের একজন হলেন- চবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।
তবে বিবৃতির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট সদস্য আছে ৫০ জন। বাকি ৪২ জন সিনেট সদস্য কিন্তু বঙ্গবন্ধু চেয়ারে আমি মনোনীত হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি। যারা প্রশ্ন তুলেছেন তাদের অনেকের বিরুদ্ধে গবেষণায় জালিয়াতি, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্ত্রীর চাকরিচ্যুত হওয়া, ছাত্রসংগঠনের মধ্যে গ্রুপিং ও ইন্ধন, সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে ইন্ধন যোগানোসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেই এ কয়জন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে।
Advertisement
আবদুল্লাহ রাকীব/এএম/এমকেএইচ