রাজশাহীতে যুবলীগের এক নেতার অস্ত্রের আঘাতে মো. রাজন (২৬) নামে এক যুবকের গোপনাঙ্গের কিছুটা অংশ কেটে গেছে। শনিবার দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানার তালাইমারী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ওই যুবককে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
Advertisement
আহত রাজন তালাইমারী এলাকার আবদুর রাজ্জাকের ছেলে। নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ড (পশ্চিম) যুবলীগের সভাপতি মিলন হোসেনের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার গোপনাঙ্গ কেটেছে বলে অভিযোগ তার স্বজনদের। এলাকার আলমগীর হোসেন নামে এক কশাইয়ের কাছে চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে।
আলমগীর হোসেনের ভাই হেলাল হোসেন বলেন, আমরা গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করি। বৃহস্পতিবার রাতে তালাইমারী ঘাটে আমরা একটি গরু জবাই করি। তখন যুবলীগ নেতা মিলন তার কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে গিয়ে বলেন- গরুর পেটে বাচ্চা ছিল। তারা গরুর পেটের একটি মাংস দেখিয়ে সেটিকে বাচ্চা বলে মোবাইলে ছবি তুলতে শুরু করেন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদের কাছ থেকে আট হাজার টাকা নিয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার সকালে তারা আবার মাংসের দোকানে গিয়ে চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু আমরা চাঁদা না দেয়ায় তারা দেখে নেয়ার হুমকি দেন। এর প্রেক্ষিতে আমরা মাংস ব্যবসায়ীদের পরামর্শে সন্ধ্যায় নগরীর বোয়ালিয়া থানায় মিলনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ দেই। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে শনিবার দুপুরে মিলন ও তার সহযোগীরা লাঠিশোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তালাইমারী এলাকায় আমাদের বাড়ি ঘেরাও করেন। বাড়ি থেকে বের হলে মিলন ও তার সহযোগীরা আমাদের মারধর শুরু করেন। এ সময় রাজনসহ আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে তাদেরও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে মিলনের ধারালো অস্ত্রের আঘাত রাজনের তলপেটে গিয়ে লাগে। এতে তার পেট এবং গোপনাঙ্গের কিছুটা স্থান কেটে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে রাজন হাসপাতালের দুই নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
Advertisement
জানতে চাইলে নগরীর মতিহার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন খান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই মারামারি থেমে গেছে। মারামারিতে রাজন নামে একজন আহত হয়েছেন। তার তলপেট ও গোপনাঙ্গের কিছুটা অংশ কেটে গেছে বলে শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগ নেতা মিলন হোসেন বলেন, কশাইদের হামলায় আমাদেরই একজন আহত হয়েছেন। ওদের কেউ আহত হয়নি।
চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ওরা (কশাই) গর্ভবতী গরু জবাই করেছিল। আমরা শুধু প্রতিবাদ করেছি। গরুর বাচ্চার ছবি এবং ভিডিও আমার কাছে আছে। সেগুলো বোয়ালিয়া থানার ওসিকে দেখিয়েছি, মতিহারের ওসিকেও দেখাব।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর/এমকেএইচ
Advertisement