নানা প্রতিবন্ধকতার পরও রফতানি বাণিজ্যে সুফল পাচ্ছে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) দুই হাজার ৭৫৬ কোটি ২৮ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। এ আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেশি। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাত দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
Advertisement
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক। এ খাতের রফতানি আয় ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। এছাড়া রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে অন্যান্য খাতের আয়ও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। যার কারণে রফতানিতে বড় প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হচ্ছে। এধারা অব্যাহত থাকলে অর্থবছর শেষে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে সব ধরনের পণ্য রফতানিতে বৈদেশিক মুদ্রার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন হাজার ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই হাজার ৫৫৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার। তবে এ সময়ে আয় হয়েছে দুই হাজার ৭৫৬ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাত দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের একই সমেয়ের তুলনায় এ বছর রফতানি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১২ দশমিক ৯৮ শতাংশ। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রফতানি আয় ছিল দুই হাজার ৪৩৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, একক মাস হিসেবে চলতি বছরের ফেব্রুরিতে ৩৩৮ কোটি ৩২ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। এটি গত ফেব্রুরির তুলনায় ১০ দশমকি ১২ শতাংশ বেশি। গত বছরের ফেব্রুরিতে পণ্য খাতে রফতানি আয় ছিল ৩০৭ কোটি ২১ লাখ ডলার।
Advertisement
দেশের রফতানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। আলোচিত সময়ে এ খাত থেকে রফতানি আয় এসেছে দুই হাজার ৩১২ কোটি ৬০ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাত দশমিক ৯৩ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর রফতানি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১৪ দশমিক ১৭ শতাংশ। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে পোশাক খাতে রফতানি আয় ছিল দুই হাজার ২৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের আট মাসে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ৫৮ দশমিক ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে কৃষিপণ্য রফতানিতে। এ খাত থেকে আয় এসেছে ৬৪ কোটি ২৭ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রফতানি আয় বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৯ শতাংশ। প্লাস্টিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ১৮ দশমিক ৩২ শতাংশ। এ সময়ে আয় হয়েছে সাত কোটি ৬৮ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭ দশমিক ১৬ শতাংশ বেশি।
এদিকে আলোচিত সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে। একই সঙ্গে অর্জিত হয়নি লক্ষ্যমাত্রা। এ সময়ে এ খাত থেকে আয় এসেছে ৫৬ কোটি ডলার। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১ দশমিক ১৮ শতাংশ। এছাড়া চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কম হয়েছে পাঁচ দশমিক ৭১ শতাংশ। প্রবৃদ্ধিও গত বছরের চেয়ে ১১ দশমিক পাঁচ শতাংশ কম হয়েছে। এ সময়ে আয় হয়েছে ৬৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার।
এসআই/এএইচ/এমকেএইচ
Advertisement