বাবরি মসজিদ ও রাম জন্মভূমি ইস্যুতে সৃষ্ট মামলার নিষ্পত্তি করতে সব পক্ষ থেকে মধ্যস্থতাকারী চেয়েছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের রায়ের মাধ্যমে এ বিরোধ মীমাংশা না করে সব পক্ষের লোক দ্বারা গঠিত পঞ্চায়েতের মাধ্যমে এ মামলা নিষ্পত্তি করতে চায়।
Advertisement
বুধবার (০৬-০৩২০১৯) ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বে গঠিত ৫ বিচারপতির বেঞ্চ বিরোধ নিষ্পত্তিতে ‘মধ্যস্থতাকারী প্রস্তাবের’ এ সিদ্ধান্ত দেন।
বাবরি মসজিদ ও রাম জন্মভূমি উভয় পক্ষকে এ দিন অবহিত করা হয় যে, তাদের মধ্য থেকে বিরোধ মীমাংশায় মধ্যস্থতাকারীর নাম প্রস্তাব করার জন্য। প্রস্তাবিত নাম থেকে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ মধ্যস্থতাকারী পঞ্চায়েতের নাম চূড়ান্ত করবে। সব পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে এ মামলার নিষ্পত্তি ও বিবাদমান সবার মধ্যে উত্তেজনা কমাতে সুপ্রিম কোর্টের এ প্রস্তাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ছাড়াও অন্যরা হলেন- বিচারপতি এ এস বোদড়ে, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি অশোক ভূষণ এবং বিচারপতি এস এ নাজির।
Advertisement
এ মামলায় মোট পাঁচটি পক্ষ রয়েছে। ভারতের সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া, রাম লালা বিরাজমান, অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা এবং মহন্ত সুরেশ দাস।
আরও পড়ুন > ভারতের স্কুলে কুরআন শিক্ষার প্রস্তাব করেছেন মেনেকা গান্ধী
উল্লেখ্য যে, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড এবং নির্মোহী আখড়া মধ্যস্থতাকারীর সিদ্ধান্তে রাজি হলেও বাকি ৩ পক্ষ মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে এই মামলার নিষ্পত্তি সম্ভব নয় বলে প্রবল আপত্তি তোলে।
মধ্যস্থতা বিরোধীতায় তাদের যুক্তি হলো, পক্ষরা রাজি হলেও সাধারণ মানুষ সে সিদ্ধান্ত নাও মেনে নিতে পারেন। যেখানে অনেক মানুষের ভাবাবেগ জড়িয়ে আছে।
Advertisement
এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ বিচারপতি এ এস বোদড়ে বলেন, ‘জমি নয়, বরং রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলা হলো ভাবাবেগ এবং বিশ্বাস’-এর। কে আক্রমণ করেছিল, বাবর কী করেছিল, সেই সময় কে রাজা ছিল, মসজিদ না মন্দির ছিল, সেসব আমরা পাল্টাতে পারব না। আমরা শুধু বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করতে পারব।’
বিচারপতি বোদড়ে বিরোধীদের আইনজীবির বক্তব্যের বিষয়ে বলেন, ‘আপনি তো ধরেই নিচ্ছেন, এক পক্ষকে অনেক কিছু ছাড়তে হবে বা সমঝোতা করতে হবে এবং অন্য পক্ষের জয় হবে। কিন্তু মধ্যস্থতা মানেই সব সময় এমনটা নাও হতে পারে।’
শান্তির লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট বেঞ্চের মন্তব্য, ‘আমরা বিষয়টা (মধ্যস্থতাকারী) অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। আর মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিষ্পত্তির এক শতাংশ সম্ভাবনা থাকলেও সেই সুযোগটাই আমরা দিতে চাই।’ আনন্দবাজার, এনডিটিভি।
এমএমএস/জেআইএম