সাহিত্য

৭ মার্চের একগুচ্ছ কবিতা

জনতার কাঙ্ক্ষিত কবিতাঅকেন সুমন আহমেদ

Advertisement

মিছিলের প্ল্যাকাডে উত্তাল বর্ণমালা দু’হাত বাড়িয়ে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নডানা। প্রত্যাশা দিন পেরিয়ে আসবে নতুন দিন স্লোগানে তাই ঝাঁঝালো কাব্যঋণ।

একটি মানচিত্রের জন্য একটি পতাকার জন্য মা-মাতৃভূমির জন্য নতুন আলোর ভোরের জন্য, ছাত্র-জনতা-মজুর, কিশোর-বৃদ্ধ নারী-পুরুষ-বৃহন্নলা, ধর্ম-বর্ণ-আদিবাসীসবার শত বছরের অপেক্ষা।

স্লোগানে স্লোগানে কম্পিত চারপাশ বুকে সবার হৃৎপিণ্ডের ধকধকানি। নেতা এসে দাঁড়ালেন জনসম্মুখে আবৃত্তি করলেন জনতার কাঙ্ক্ষিত কবিতাখানি!

Advertisement

‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

* জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং কবি নির্মলেন্দু গুণকে উৎসর্গকৃত।

৭ মার্চের ভাষণমোহাম্মদ মাসুকুজ্জামান

রুদ্র প্রকটে বজ্র অনলেউত্থিত তর্জনী লক্ষ্যে লাখো জনতা দিলে ডাক মুক্তির সোপানে। বক্ষে তোমার দেশমাতৃকা, ছিল অনুরাগে।পিতা তুমি আজও অমলিন অবিনশ্বর। ছিলে সেদিনও অধীশ্বর, মুক্তিকামী চেতনার।

Advertisement

শব্দের বারুদে ক্রমাগত চয়নে- দিয়েছিলে জ্বেলে তপ্ত চিঙ্গারে। সপ্রতিভ সেই মুষ্টিবদ্ধ হাত সাথে আঙুল একটি ছিল জাগরণ।‘থাক সঙ্গবদ্ধ, হও এক; বলীয়ান’,এ যেন তোমার অব্যক্ত কথন তিমির বেদিতে।

কী মহান বাগ্মীতায় কাগজে লেখা বিনে, মননের কাগজে লিখিত বাণী- বুনে ছিলে নেতা অবলীলায়।শোষিত মানুষের হৃদয় ছুঁতে৭ মার্চ একাত্তরে।

স্বাধীনতার অঙ্কুরিত সেই স্বপ্ন- বেড়েছিল তোমার পুষ্টিতে, মাত্র নয় মাসে, ১৬ ডিসেম্বরে।তপ্ত গ্রীষ্ম পেরিয়ে শীতের আগমনেস্বাধীন দেশের স্বাধীন বসন্ত- পেয়েছিল আপামর, মানচিত্র মাঝে অনেক ত্যাগ রক্তের দামে।

চেতনাদীপ্ত সে ভাষণমো. হাসান ঈমাম

আমি পৌঁছে দেব পৃথিবীর প্রতি প্রান্তরেরক্তভেজা প্রতিটি জনপদে আন্দোলনে মনোবল সঞ্চারণে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের সে ভাষণ,সহসা ভয়-সংকোচ ঝেরে ফেলেহতাশার মাঝে শোষিত খুঁজে পাবে শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর যত প্রেষণ।

আমি মোহাচ্ছন্ন হয়ে অস্পৃশ্য শিহরণে কান পেতে শুনবো সে ভাষণ।

আমি ছড়িয়ে দেব সে ভাষণ,যে ভাষণ শোষকের দুর্গে তোলে কম্পন।যে ভাষণে নিস্পৃহ হৃদয়ও করে শক্তি অন্বেষণ,মুক্ত বাতাসে জাতির স্বপ্ন সাজাতেঘর থেকে মাতৃস্নেহের শৃঙ্খল ছিড়েনির্ভয়ে পথে-প্রান্তরে তোলে আলোড়ন,আমি ছড়িয়ে দেব সারা বিশ্বেদলিতদের মাঝে সে ভাষণ।

যে ভাষণে সুললিত কণ্ঠে মানুষের অধিকার আদায়ে ঝরে বিনীত নিবেদন,যে ভাষণ কভু বীরোচিত বাণীতে দুর্বার দুর্দমনীয় স্বরে করে অধিকার অর্জন।

সবাই কান পেতে শোন বজ্রকণ্ঠের সে ভাষণ,নিষ্প্রভ কর্ণও আজ ফিরে পাবে শিহরণ।

আমি কান পেতে শুনি সে ভাষণ- যে ভাষণ শুনে এক মৃত্যুপুরেশীর্ণকায় বাহুতে হয় পেশীশক্তির আগমন,দেশের জন্য বীরদর্পে যারা মৃত্যুকে করে আলিঙ্গন।

যে ভাষণ শুনে শূন্য হাতে তপ্ত বুলেটের সম্মুখে হাসিমুখে লাখো বক্ষ চিড়েবিশ্বের বুকে এক আলোকরশ্মির প্রজ্বলন,বিপ্লবী জনতার হাতে বাংলাদেশের জাগরণ।

আমি দিন-রাত আত্মচেতনে উদ্বীপ্ত মননেসদা কান পেতে থাকি শুনতে সে ভাষণ।

এসইউ/জেআইএম