ওবায়দুল কাদের ও বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত সংক্রান্ত বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক বক্তব্য দুঃখজনক ও লজ্জার বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
Advertisement
মারাত্মক হৃদরোগে আক্রান্ত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এখন সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যদিকে, কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। তিনিও অসুস্থ। তার চিকিৎসা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে করা হচ্ছে। কিন্তু বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যে, সুচিকিৎসার জন্য তাকেও বিদেশে পাঠানো হোক।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হানিফ বলেন, ওবায়দুল কাদের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান। আমরা দেখেছি, যারা এ দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেনি, স্বাধীনতাবিরোধী, পাকিস্তানের দোসর-যুদ্ধাপরাধী, তাদের মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা উড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছিল৷ এখন ওই স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের তুলনা অত্যন্ত দুঃখজনক, লজ্জার।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া আদালতের দণ্ডপ্রাপ্ত একজন কয়েদি। তার চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে কারা কর্তৃপক্ষ। কারাগারে যে সব কয়েদি রয়েছেন তাদের সুচিকিৎসা কোথায়, কখন, কীভাবে হবে সেটা পুরোপুরি কারা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। এ নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দলের কোনো বক্তব্য থাকতে পারে না। বেগম জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য যেটা প্রয়োজন সর্বোচ্চটাই কারা কর্তৃপক্ষ করছে বলে সংবাদ সম্মেলন থেকে দাবি করেন হানিফ।
Advertisement
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের টানা তিন মেয়াদের এ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নেতারা যখন এ রেফারেন্স টেনে বলেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হচ্ছে কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে করা হচ্ছে। তাদের এ রেফারেন্সটা অত্যন্ত দুঃখজনক, এটা দেশের জনগণকে কষ্ট দেয়।
তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্বশীল একজন মন্ত্রী। তার যে অবস্থা সেটা অত্যন্ত সংকটাপন্ন ছিল, চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে তাকে দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে। এখানকার চিকিৎসকরা সন্দিহান ছিলেন যে, বর্তমান পরিস্থিতি থেকে যদি অবস্থার আরও অবনতি হয় তাহলে বাংলাদেশের চিকিৎসার সুযোগ নেই। ডাক্তারদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
‘কিন্তু একটা জিনিস এখানে খুবই দুঃখজনক, ওবায়দুল কাদের শুধু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকই নন, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন; জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। আর যার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে তিনি, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেননি; যুদ্ধের সময় পাকিস্তানে অবস্থান করেছেন, তাদের মন্ত্রী বানিয়ে গাড়িতে দেশের পতাকা তুলে দিয়েছিলেন। যিনি স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেননি তার সঙ্গে একজন মুক্তিযোদ্ধার তুলনা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং লজ্জার।’
আওয়ামী লীগের এ মুখপাত্রের মতে, একদিকে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য সরকারের মন্ত্রীর দ্বারস্থ অন্যদিকে তার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন; এটি বিএনপির অস্তিত্ব সংকটের স্মারক। একই সঙ্গে রাজনৈতিক এজেন্ডাবিহীন বিএনপি বিভিন্ন সময় নানা কর্মসূচি দিয়ে মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষের মনে টিকে থাকতে চাইছে।
Advertisement
এইউএ/এমএআর/এমকেএইচ