ব্রিটেনের প্রখ্যাত পত্রিকা ডেইলি মেইলের একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বাংলাদেশি কিশোরী নওশিন আকতারের বিয়ের সামগ্রিক চিত্র। গত ২৪ আগস্টের ওই প্রতিবেদনটিতে মূলত বাংলাদেশের বাল্যবিবাহের চিত্রই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেকোনো মেয়ের জন্যই দিনটি জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন। কিন্তু ১৫ বছরের নওশিনকে দেখে তেমনটা মনে হচ্ছিল না। তাকে দেখাচ্ছিল বিধ্বস্ত। কেননা কিশোরী নওশিনকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে ৩২ বছর বয়সী এক যুুবকের সঙ্গে। ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন হতে জানা যায়, মানিকগঞ্জের মেয়ে নাওশিন। স্কুলছাত্রী মেয়েটিকে বিয়ের দিন ম্লান দেখাচ্ছিল। কিছুটা ভীতও।পত্রিকাটি জানায়- তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি, বাংলাদেশে নওশিন একা নয়। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি হারে বাল্যবিবাহ হওয়া দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এ মাসের শুরুর দিকে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশের ২৯ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয় ১৫ বছর বয়সেরও আগে! শতকরা ৬৫ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয় ১৮ বছরেরও আগে।বাল্যবিবাহ একটি মেয়ের ওপর ভীষণ নেতিবাচক ও বিপজ্জনক প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানিয়েছে পত্রিকাটি। ‘গার্লস নট ব্রাইডস’ নামে একটি সংগঠনের গবেষণায় দেখা গেছে, বেশিরভাগ কিশোরী বধূকেই বিয়ের পর পড়াশোনা থামিয়ে দিতে হয়। যেসব মেয়ে ১৫-২০ বছর বয়সে গর্ভবতী হয়, তাদের শিশু জন্মদানের সময় মৃত্যুর ঝুঁকি ২০ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী গর্ভবতী নারীদের চেয়ে দ্বিগুণ। অপরদিকে ১৫ বছরের কম বয়সী মেয়েদের ক্ষেত্রে এ ঝুঁকি ৫ গুণ বেশি। এছাড়া স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার বয়সের ব্যবধান বেশি হয় বলে ঘরোয়া সহিংসতা ও যৌন নির্যাতনও বেশি হয়।প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও দরিদ্রতা বাল্যবিবাহের অন্যতম প্রধান কারণ। অল্প বয়সে মেয়ে বিয়ে দেয়া হলে তার দরিদ্র পিতামাতাকে অনেক বেশি যৌতুক দিতে হয় না। দেশটিতে (বাংলাদেশে) অর্থনৈতিকভাবেও নারীদের আয় পুরুষদের আয়ের চেয়ে অনেক কম। ডেইলি মেইল জানায়- বাংলাদেশে মেয়েদের অভিভাবকরা বিশ্বাস করেন, বিয়ের মাধ্যমে যৌন নির্যাতন ও হয়রানি থেকে মেয়েকে রক্ষা করা যাবে।এসএইচএস/এমএস
Advertisement