জাতীয়

ইউরোপীয় ইউনিয়নের চেয়ে বেশি বাণিজ্য সুবিধা দেবে যুক্তরাজ্য

আসছে এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যে মধ্যে নিয়মিত বৈঠকের অংশ হিসেবে তৃত্বীয় কৌশলগত সংলাপ। এবারের বৈঠকে দুদেশের মধ্যে ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য সম্পর্ক প্রাধান্য পাবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) চেয়ে বেশি বাণিজ্য সুবিধা বাংলাদেশকে দেয়া নিয়ে আলোচনা করবে ঢাকা-লন্ডন। কূটনৈতিক সূত্র এসব কথা জানিয়েছে।

Advertisement

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য সুবিধা চায় বাংলাদেশ। যুক্তরাজ্যও বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছে যে, তারা বাংলাদেশকে কমপক্ষে ইইউয়ের দেয়া এভরিথিংস বাট আর্মস (ইবিএ) সুবিধা দেবে। তবে ইবিএর থেকেও বেশি সুবিধাও দিতে চায় তারা। আর যতদিন ইবিএ এর থেকে আরও ভালো কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারবে না দুই দেশ, ততদিন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্কে ইবিএ এর সমান সুবিধা ভোগ করবে বাংলাদেশ।

ঢাকায় যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার এলিসন ব্লেক পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে বিদায়ী সাক্ষাতেও বিষয়টি উল্লেখ করেন বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রেক্সিট পরবর্তী বাংলাদেশের বাণিজ্য সুবিধা নিয়ে আলোচনা করলে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার ইইউয়ের থেকে বেশি বাণিজ্য সুবিধার নিয়ে আলোচনার নিশ্চয়তা দেন।

এছাড়া দুই দেশের কৌশলগত সংলাপে ব্রেক্সিট নিয়ে ইউরোপের সার্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনসহ দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক, অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সম্পর্ক, নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতা এবং অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বৈশ্বিক ইস্যুগুলো নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।

Advertisement

“এপ্রিলে ঢাকা-লন্ডনের মধ্যে তৃতীয় কৌশলগত সংলাপটি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবে। তবে এখনো দিন এবং আলোচ্যসূচি চূড়ান্ত হয়নি। এটা নিয়ে দুপক্ষ কাজ করছে,” জাগো নিউজকে বলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে নিয়মিত বৈঠকে বসতে কৌশলগত সংলাপ চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য। প্রথম বৈঠকটি ২৮ মার্চ ২০১৭ সালে বাংলাদেশে এবং দ্বিতীয় বৈঠকটি ১৫ মার্চ ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন ঢাকাস্থ যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার এলিসন ব্লেক।

এ সময়ে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠানগুলো আরও বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া বাংলাদেশিদের জন্য যুক্তরাজ্যের ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া ঝামেলা মুক্ত করার আহ্বান জানান।

Advertisement

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে টেকসই এবং শান্তিপূর্ণ সমাধান খোঁজার জন্য বৈশ্বিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য যুক্তরাজ্যের নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময়ে দুই দেশের আসন্ন কৌশলগত সংলাপের বিষয়টি তুলে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে ‘বিস্ময়কর কাঠামো’ বলে উল্লেখ করেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে এলিসন ব্লেকের বৈঠককালে বর্তমান রাজনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন। সেখানে গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের যুক্তরাজ্যের বেশ কিছু সফর, রোহিঙ্গা সংকট, জঙ্গিবাদ দমন এবং যুক্তরাজ্যে আসন্ন ক্রিকেট বিশ্বকাপ নিয়ে আলোচনা হয়।

জেপি/বিএ