সত্যের যেমন মৃত্যু নেই, তেমনি সততার সঙ্গে করা যে কোনো কাজের ফলাফলও বৃথা যায় না। কাজ যত ছোটই হোক না কেন তাতে যদি একনিষ্ঠতা থাকে তবে তা সফলতার মুখ দেখবে। আর এতে যদি দুনিয়ার কোনো উদ্দেশ্য কিংবা লোক দেখানো কোনো বিষয় থাকে তবে তা হবে ব্যর্থতার মূল কারণ। প্রিয়নবি এ ব্যাপারে ভয় করছেন।
Advertisement
আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘আর সেসব লোক, যারা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে এবং যারা আল্লাহর ওপর ঈমান আনে না, ঈমান আনে না কেয়ামতের দিনের ওপর এবং শয়তান তাদের সঙ্গী হয়। সে হলো নিকৃষ্টতম সঙ্গী।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৩৮)
আল্লাহ তাআলা মানুষকে একনিষ্ঠতার সঙ্গে শুধু তার জন্যই কাজ করতে সৃষ্টি করেছেন। অথচ মানুষ বিভিন্ন উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য কাজ করে থাকে। যা ‘রিয়া’ হিসেবে পরিচিত। এ ‘রিয়া’কেই প্রিয় নবি তাঁর ভয়ে কারণ উল্লেখ করে ছোট শিরক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
Advertisement
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘হে মানুষ! তোমাদের ব্যাপারে ছোট শিরক সম্পর্কে আমার অন্তরে ভয় হয়।
সাহাবায়ে কেরাম জানতে চান, ছোট শিরক আবার কী?
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানালেন, তাহলো ‘রিয়া’।
রিয়াকারীর উপমা হচ্ছে এমন-
Advertisement
কোনো ব্যক্তি অর্থের (টাকা-পয়সা) পরিবর্তে ছোট ছোট পাথর দ্বারা ব্যাগ পরিপূর্ণ করলো এ উদ্দেশ্যে যে, মানুষ তাকে সম্পদশালী মনে করবে।
ওই ব্যক্তির এ কাজে মানুষ তাকে হয়তো সম্পদশালী মনে করবে কিন্তু পাথর ভর্তি ব্যাগে ওই ব্যক্তির কোনো উপকার হবে না। এমনকি ব্যাগ ভর্তি পাথর দ্বারা অর্থের কোনো প্রয়োজনও মিটাতে পারবে না।ঠিক তেমনি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে যদি কোনো ব্যক্তি ইবাদত-বন্দেগি কিংবা কোনো ভালো কাজ করে তবে তাতে সে মানুষের কাছে আল্লাহভিরু কিংবা বড় সমাজ সেবক হতে পারবে ঠিকই কিন্তু পরকালে তার কোনো ভালো কাজই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
হাদিসের আলোকে লোক দেখানো কাজ বা ইবাদত-বন্দেগি ছোট শিরক হিসেবে পরিগণিত। তাই এ কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি। কেননা ছোট ছোট শিরক এক সময় বড় শিরকে পরিণত হয়।
এ লোক দেখানো ভালো কাজ কিংবা ইবাদতকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্রাম ‘রিয়া’ হিসেবে উল্লেখ করে এ ব্যাপারে ভয় করতেন। কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা ‘রিয়া’কারকে অভিশপ্ত হিসেবে ঘোষণা করেছেন-
‘যারা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে নামাজ (ইবাদত) পড়ে এবং নামাজের খবর রাখে না, তাদের জন্য দুর্ভোগ।’ (সুরা মাউন : আয়াত ৪-৬)
সুতরাং মানুষের উচিত, কাজ ছোট হোক কিংবা বড়, সামান্য সময়ের জন্য হোক কিংবা দীর্ঘ সময়ের জন্য হোক। তা হতে হবে নিঃস্বার্থ। শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। তবেই মানুষের সব ভালো কাজ আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য হবে, পরকালে সর্বোত্তম প্রতিদান লাভ করবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভয় পোষণ করা ‘রিয়া’ তথা লোক দেখানো কাজ থেকে হেফাজত করুন।আমিন।
এমএমএস/এমকেএইচ