অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বিশ্বব্যাপী চলমান অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশ গত ১০ বছরে ৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সামর্থ হয়েছে। এ বছর প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আমরা আগামী বছর ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যাশা করছি।
Advertisement
সোমবার রাজধানীর শেরে বাংলানগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে নিজ কার্যালয়ে সৌদি রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ এইচ এম আল মুতাইরির সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের রয়েছে বেতন-ভাতায় সহজে প্রশিক্ষণযোগ্য নিবেদিত প্রাণ জনশক্তি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে স্বল্প ব্যয় এবং বৃহৎ শুল্কমুক্ত বাজারে প্রবেশ সুবিধা। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ এবং অত্যন্ত আকর্ষণীয় প্রণোদনার সুযোগ গ্রহণের মাধ্যমে অধিক হারে মুনাফার সুযোগ বাংলাদেশে রয়েছে। বিদ্যুৎ, সৌরশক্তি, জ্বালানি, টেলিকমিউনিকেশন ও তথ্যপ্রযুক্তি, পেট্রোকেমিক্যাল, ওষুধশিল্প, জাহাজ নির্মাণ এবং কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণের মতো বিভিন্ন উদীয়মান খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
মন্ত্রী দেশের কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানের কথা উল্লেখ করে বলেন, ভৌগোলিক অবস্থান বাংলাদেশকে আঞ্চলিক যোগাযোগ, বিদেশি বিনিয়োগ এবং গ্লোবাল আউটসোর্সিংয়ের একটি কেন্দ্রে পরিণত করেছে। দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি খাতে বিনিয়োগকে টেকসই করার জন্যই সরকার এ শিল্পাঞ্চলগুলো গড়ে তুলেছে।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, আমরা সৌদি আরবের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে দুই হাজার একর জমি বরাদ্দ করেছি। এগুলো নিজস্ব চাহিদা মোতাবেক ব্যবহার করতে পারবেন বিনিয়োগকারীরা। দু'দেশের মধ্যে বিদ্যমান ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেড়েছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে যা ছিল এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধি করে দু'দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগগুলোর পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করতে হবে। এ সময় বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানান অর্থমন্ত্রী।
বৈঠককালে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন আব্দুল্লাহ এইচ এম আল মুতাইরি। এছাড়া বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অভূতপূর্ব গতি সঞ্চারিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
আল মুতাইরি বলেন, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যাচ্ছেন। শুধু এ বছরেই শ্রমিক ভিসা দেয়া হয়েছে আট হাজার ৩০০টি। এছাড়া ওমরা ভিসা ৮০ হাজার এবং এক লাখ ২৮ হাজার হজ ভিসা দেয়া হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে দু'দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও সম্প্রসারণে দ্বি-পাক্ষিক যোগাযোগ ও সহযোগিতার ধারা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এ লক্ষ্যে আগামী ৭ মার্চ সৌদি আরবের বাণিজ্য ও বিনিয়োগবিষয়ক মন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রীর নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করবেন বলেও জানান সৌদি রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ এইচ এম আল মুতাইরি।
Advertisement
এমইউএইচ/এমএআর/জেআইএম