বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও কম্পিউটার বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেছেন, ‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার বড় সমস্যা হচ্ছে পাঠ্যপুস্তক। এটি অনেক বড় সমস্যা দেখা হিসেবে দেখা দিয়েছে। বর্তমান শিক্ষা দিয়ে আমাদের সন্তানকে আলোকিত মানুষ হিসেবে তৈরি করা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
Advertisement
সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর এডুকেশনাল রিসোর্স আয়োজিত ‘শিক্ষা ক্ষেত্রে তরুণ উদ্যোক্তা : চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা’ বিষয়ক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. কায়কোবাদ বলেন, ‘সন্তানদের সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত না করে শুধু পদ্মা ব্রিজ করে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে নয়। সকলকে ভালো ও উন্নতমানের শিক্ষা দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে এখনও বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেনি। এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষা টিকবে না। তাই বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষা গড়ে তুলতে হবে।’
Advertisement
এই শিক্ষাবিদ বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য পাঁচ বছর পরপর পাঠ্যপুস্তুকের কারিকুলাম পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। বেসিক বিষয়গুলোর তেমন পরিবর্তন হয় না। তাই কারিকুলাম পরিবর্তন না করে তা যুগোপযোগী করে দীর্ঘদিন পড়ানো সম্ভব হবে। সম্প্রতি আমরা মাধ্যমিকের ১২টি পাঠ্যপুস্তক সংশোধন করেছি। এমন করে সকল ক্লাসের পাঠ্যবই যুগোপযোগী করে তুলতে হবে।’
ভালো বই তৈরি করতে পারলে গরীর ছেলে-মেয়েরা কোচিং পর্যন্ত না যেতে পারলেও সে পিছিয়ে থাকবে না মন্তব্য করে ড. কায়কোবাদ বলেন, হঠাৎ করে ভালো শিক্ষার্থী ও মেধা তৈরি না করতে পারলেও ভালো পাঠ্যপুস্তক তৈরি করা সম্ভব। এতে হয়তো ২০০ কোটি টাকা ব্যয় হলেও তা দেশকে গড়তে সহায়ক হবে। গোলটেবিল আলোচনায় বিভিন্ন খাতে সফল উদ্যোক্তারা বলেন, আমদের দেশে অপ্রতুল জনসংখ্যা থাকলেও জনশক্তির অনেক অভাব রয়েছে। তাই দক্ষ মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। তাই জনগণকে জনশক্তিতে রূপান্তরের আহ্বান জানান তারা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমেদ বলেন, ‘দেশে মাথাপিছু আয় বাড়লেও সেটি আমাদের কোথাও নিয়ে পৌঁছাবে না। তরুণ-সমাজকে মানসম্মত শিক্ষায় শিক্ষিত ও স্কিল সম্পন্ন করে তুলতে পারলে দেশ দ্রুত এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বাড়াতে হবে। এসব খাতে ব্যয় না বাড়ালে আমাদের পিছিয়ে পড়তে হবে। শিক্ষা খাতে উদ্যোক্তদের সহযোগিতা করে উৎসাহ দিতে হবে। সরকারের বড় কমিটমেন্ট থাকলে যুব সমাজকে অনেক দূর এগিয়ে নেয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
Advertisement
গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআর বিভাগের অধ্যাপক ড. তারিক আহসান, অন্যরকম শিক্ষার প্রতিষ্ঠাতা মাহামুদুল আলম সোহাগ, বিভিন্ন খাতে সফল উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, শিক্ষা খাতে কর্মরত সরকারি-বেসরকারি কর্মকতা প্রমুখ।
এমএইচএম/এমবিআর/এমকেএইচ