দেশের সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মানসম্মত শিক্ষা দানে সক্ষম হচ্ছে না। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে। মনে রাখতে হবে, কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সার্টিফিকেট বিক্রির দোকান হতে পারে না।
Advertisement
রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সিটি ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনাজনিত দুর্বলতা রয়েছে। অনেকের ভালো গ্রন্থাগারসহ যোগ্য শিক্ষকের অভাব বিদ্যমান। ফলে শিক্ষার মান কাঙ্ক্ষিত স্তরে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য আরও আন্তরিক চেষ্টা প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়কে হতে হবে জ্ঞান সৃষ্টি ও জ্ঞান ধারণের একটি মূল্যবান প্রতিষ্ঠান। নিজেদের স্বার্থেই এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের সকল সমস্যার সমাধান করে আর্দশ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হতে হবে।
নতুন গ্র্যাজুয়েটদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, একজন আলোকিত মানুষ হয় অসম্প্রদায়িক সত্যানুসন্ধানী, সহনশীল, মানবিক, মূল্যবোধে সম্পন্ন। তার জন্য তাকে জানতে হয় নিজের মাতৃভাষা, ইতিহাস ও ঐতিহ্য, বিশ্বসভ্যতা, দর্শন, মানবজাতির ইতিহাসসহ আরও বিভিন্ন বিষয়। আমি আশা করি তোমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এসব জিনিস তোমাদের শিখিয়েছে।
Advertisement
তিনি বলেন, শিক্ষা ও জ্ঞান একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটি মনে করার কোনো কারণ নেই যে, আজকের এই সমাবর্তনের মধ্যে দিয়ে গ্র্যাজুয়েটদের শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি ঘটছে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন শেষ হতে পারে কিন্তু বাস্তব জীবনে আসল শিক্ষা শুরু এখন থেকেই।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, তোমাদের স্বপ্ন আর জাতির স্বপ্ন হবে এক। গণতান্ত্রিক ও সন্ত্রাসবিহীন রাষ্ট্র গড়তে হবে। বিশ্বের শ্রম বাজারে উপযোগী করে দক্ষ কর্মী গড়তে সিটি ইউনিভার্সিটি যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে। সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয সম্পূরক হয়ে একে অপরের সঙ্গে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, তোমরা আজ যারা ডিগ্রি নিয়ে বের হচ্ছে, তারা এখন থেকে অর্জিত জ্ঞান ও মেধা দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজে লাগাবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
সিটি ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কালো, লাল ও হলুদ গাউন আর মাথায় ক্যাপ পরে সমবেত হন শিক্ষার্থীরা। এবারের সমাবর্তনে মোট ৩ হাজার ৫২৫ জনকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। তার মধ্যে স্নাতক পর্যায়ের ৩ হাজার ৬১ জন ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৪৭১ জন রয়েছেন।
Advertisement
সম্মিলিত মেধা তালিকায় সেরা তিনজনকে চ্যান্সেলর স্বর্ণ পদক তুলে দেয়া হয়। স্বর্ণপদকপ্রাপ্তরা হচ্ছেন- ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী শিরীন শিলা, বিবিএ বিভাগের আমবারিন খান ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্রী মোরশেদা খাতুন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- উপাচার্য অধ্যাপক শাহ ই আলম, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন। এ ছাড়াও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য, সিন্ডিকেট সদস্য, একাডেমি কাউন্সিলর, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচএম/এনএফ/জেআইএম