পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভারতীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান মিগ টোয়েন্টি ওয়ান ভূপাতিত হয়। এই বিমানে পাইলটের আসনে ছিলেন দেশটির পাইলট উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। ভূপাতিত হওয়ার আগ মুহূর্তে প্যারাস্যুটের সাহায্যে বিমান থেকে লাফিয়ে পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার আগে ৪০ বছর আগের ভারতীয় যুদ্ধবিমান মিগ টোয়েন্টি ওয়ান থেকে আকাশ থেকে আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র চালিয়ে পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান এফ-১৬ ভূপাতিত করেন।
Advertisement
কিন্তু শ্বাসরূদ্ধকর সেই পরিস্থিতিতে কীভাবে নিজেকে সামলে নিয়েছিলেন। কিংবা রেডিওতে তার শেষ বার্তা কী ছিল। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের শেষ রেডিও বার্তা ছিল আর-৭৩ সিলেক্টেড। এই বার্তা পাঠানোর পরপরই তিনি পাক যুদ্ধবিমান লক্ষ্য করে ভিম্পেল আর-৭৩ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেন।
পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান এবং ভারতীয় সুপারসনিক বিমানের এই লড়াই চলে মাঝ আকাশে; যখন আকাশসীমা লঙ্ঘন করে কাশ্মীরের রাজৌরি সেক্টরের পশ্চিমের সুন্দরবানি এলাকার আকাশে পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান এফ-১৬ ঢুকে পড়ে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন : অভিনন্দনের নামে শিশুদের নাম রাখার হিড়িক ভারতে
Advertisement
মাঝ আকাশের এই লড়াই শেষ হয় পাকিস্তানে অভিনন্দন বর্তমানের ধরা পড়ার মধ্য দিয়ে। বিমানে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত লাগার পর প্যারাস্যুটে করে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে নামেন তিনি।
তার একদিন আগেই ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখাওয়া অঞ্চলের বালাকোটে সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে অভিযান পরিচালনা করে। ভারতের এই অভিযানের প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তান যুদ্ধবিমান এফ-১৬, জেএফ-১৭ ও মিরেইজ-৫ অ্যাটাক জেট মোতায়েন করে। এসব বিমান থেকে কাশ্মীরের সীমান্তরেখার কাছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়।
অভিনন্দন বর্তমান-সহ আরো ছয় পাইলটকে শ্রীনগর থেকে রাজৌরিতে মোতায়েন করা হয়েছিল। মিগ-২১, সুখোই-৩০ এমকেআই, মিরেইজ-২০০০ ও মিগ২৯ যুদ্ধবিমানের এই পাইলটদের দায়িত্ব ছিল পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানকে বাধা দেয়া এবং অনুপ্রবেশ ঠেকানো।
আরও পড়ুন : পাকিস্তান চাপে পড়ে অভিনন্দনকে হস্তান্তর করেনি
Advertisement
ভারতীয় বিমানবাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা জানতাম যে, বালাকোট অভিযানের পর তারা প্রতিক্রিয়া দেখাবে, কিন্তু এত দ্রুত সেই প্রতিক্রিয়া হবে তা আমরা আশা করি নাই। কিন্তু পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান ভারতের অাকাশসীমায় প্রবেশের পর তা আকাশযুদ্ধের রূপ নেয়। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে চলে এই লড়াই।
অভিনন্দন বর্তমান মিগ-টোয়েন্টি ওয়ান যুদ্ধবিমানে ছিলেন; এই বিমানটি ১৯৬০ এর দশকের। পাইলট অীভনন্দন পুরনো এই বিমান নিয়ে পাকিস্তানি আধুনিক যুদ্ধবিমান এফ-১৬ কে অচল করে দিয়েছিলেন।
কাছাকাছি লড়াইয়ে শত্রুপক্ষেটের টার্গেটে আঘাত হানতে এই বিমান থেকে স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র আর-৭৩ বেশি কার্যকরী। তবে দীর্ঘপাল্লার আরভিভি-এই ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রও বহন করা হয় এই বিমানে।
আরও পড়ুন : অভিনন্দনকে মানসিকভাবে হেনস্থা করেছে পাকিস্তান : ভারত
ভারতের অপর এক কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের লড়াইয়ে ক্ষেপণাস্ত্র আর-৭৩ সর্বোত্তম। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান থেকে গুলি চালিয়ে তৈরি মিগ-২১ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার ঘটনা বিশ্বে এই প্রথম।
এদিকে, ভারতীয় বিমান বাহিনী গুলি চালিয়ে পাকিস্তানের একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ভূপাতিতের দাবি জানালেও তা অস্বীকার করেছে ইসলামাবাদ। তারা বলেছে, পাক যুদ্ধবিমান এফ-১৬ ভূপাতিত করার দাবি মিথ্যা।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এসআইএস/এমএস