খেলাধুলা

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এমন লড়াই এবারই প্রথম

নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন, উপমহাদেশের দলগুলোর জন্য বরাবরই গোলকধাঁধা। ভারত, পাকিস্তানের মতো দলও কিউইদের মাটিতে গিয়ে নাকাল হয়। বাংলাদেশের জন্য তো কাজটা আরও কঠিন।

Advertisement

তার মধ্যে এবারের সফরের প্রস্তুতিটা একদমই ভালো হয়নি। বিরূপ কন্ডিশনে শুরুটা হলো ওয়ানডে আর টেস্ট সিরিজ দিয়ে, অথচ তার আগে দেশ থেকে টি-টোয়েন্টি ফরমেটের বিপিএল খেলে গেছেন টাইগার ব্যাটসম্যানরা।

ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। ওয়ানডে সিরিজে কোনো ম্যাচে লড়াইও করতে পারেনি মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে।

টেস্টেও শুরুটা হলো ইনিংস হার দিয়ে। কিন্তু এখানেই কি ব্যর্থতার উপাখ্যান লিখে দেয়া যায়? হ্যামিল্টন টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে টাইগাররা যেমনভাবে লড়ল, তাতে প্রশংসার দাবিও করতে পারেন সৌম্য-মাহমুদউল্লাহরা।

Advertisement

প্রথম ইনিংসে ২৩৪ রানেই অলআউট। জবাবে ৬ উইকেটে ৭১৫ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে নিউজিল্যান্ড। ৪৮১ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নামা বাংলাদেশ যখন ১২৬ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলল, তখন আসলে খেলা দেখার আগ্রহটাই হারিয়ে ফেলেন টাইগার সমর্থকরা।

তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর সৌম্য সরকার এত সহজে ছাড় দিতে চাননি। পঞ্চম উইকেটে ২৩৫ রানের লড়াকু এক জুটি গড়েন তারা। সেঞ্চুরি পেয়েছেন দুজনই। সৌম্য ১৪৯ রানে ফেরার পরও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। আশা জাগিয়েছিলেন ইনিংস পরাজয় এড়ানোর। শেষতক হয়নি। মাহমুদউল্লাহ ১৪৬ করে আউট হওয়ার পর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যায় টাইগারদের। ম্যাচটা তারা হেরেছে ইনিংস এবং ৫১ রানে।

কিন্তু এই পরাজয়ই কি শেষ কথা? দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ করেছে ৪২৯ রান, ভীষণ চাপের মুখে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এমন চাপে দাঁড়িয়ে এর আগে চারশোর্ধ্ব ইনিংস খেলার রেকর্ড নেই টাইগারদের।

অনেকে হয়তো দ্বিমত পোষণ করতে পারেন। বলতে পারেন, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এর আগেও দুটি চারশোর্ধ্ব ইনিংস আছে বাংলাদেশের। এই তো বছর দুয়েক আগেই (২০১৭ সালে) ওয়েলিংটন টেস্টে এক ইনিংসে প্রায় ছয়শ রান (৮ উইকেটে ৫৯৫ করে ইনিংস ঘোষণা) করে ফেলেছিল টাইগাররা। তার আগে ২০১০ সালে হ্যামিল্টনেই আছে ৪০৮ রানের ইনিংস।

Advertisement

হ্যাঁ, আছে। তবে ওই দুটিই ছিল বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের সংগ্রহ। ২০১৭ সালে ওয়েলিংটন টেস্টে বাংলাদেশই প্রথম ব্যাট করতে নেমেছিল। সাকিব আল হাসানের মহাকাব্যিক ডাবল (২১৭) আর মুশফিকের রহিমের সেঞ্চুরিতে (১৫৯) রেকর্ড জুটি গড়ে টাইগাররা ৮ উইকেটে ৫৯৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। ওই ম্যাচটিও ৭ উইকেটে হেরেছিল মুশফিকের দল।

আর ২০১০ সালে হ্যামিল্টন টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেটে ৫৫৩ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছিল নিউজিল্যান্ড। জবাবে আট নাম্বারে নামা মাহমুদউল্লাহর দুর্দান্ত ইনিংসে (১১৫) ৪০৮ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচটা নিউজিল্যান্ড জেতে ১২১ রানে।

ঘরে বাইরে মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যে কোনো ইনিংসে চারশোর বেশি রান করার ঘটনা এবার চতুর্থ। তিনটিই বিদেশের মাটিতে। ঘরের মাঠ চট্টগ্রামে ২০১৩ সালে প্রথম ইনিংসে ৫০১ রান করেছিল বাংলাদেশ।

এমএমআর/এমএস