বাংলাদেশের সঙ্গে আরও দু‘টি নতুন রুটে বাসসেবা চালু করতে চায় ভারত।এরই মধ্যে ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে নতুন এই রুট দুটিতে বাসসেবা চালুর প্রস্তাব দিলে বাংলাদেশ তাতে সম্মতি দিয়েছে।তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের একটি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন সূত্র জানায়, বাংলাদেশের সঙ্গে যশোর-কলকাতা ও খুলনা-কলকাতা এই দুটি রুটে বাসসেবা চালু করতে চায় ভারত।ভারতের এই প্রস্তাবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন সম্মতি প্রকাশ করেছেন।আগস্ট মাসে এই বিষয়ে একটি বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও নানা কারণে সেটা হয়নি।সেপ্টেম্বরে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।ওই বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হতে পারে।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গত জুনের ঢাকা সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এই বিষয়ে আলাপ হয়েছে।দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে একমতে পৌঁছেছেন।তবে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত হয়নি।চলতি বছরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্থল এবং রেলপথের একাধিক রুটে নতুন যোগাযোগ স্থাপন হতে পারে।স্থলপথে নতুন রুটে বাসসেবা চলাচলে ভারতের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ।অন্যদিকে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে খুলনা (বাংলাদেশ) ও কলকাতার (ভারত)মধ্যে দ্বিতীয় মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।ভারতও বাংলাদেশের এই প্রস্তাবে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আরও জানা গেছে, খুলনা ও কলকাতার মধ্যে দ্বিতীয় মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর জন্য আরও যাত্রীবান্ধব কাস্টম ও অভিবাসন ব্যবস্থা সহজ করার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কাজ শুরু করেছেন।এদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরে দুই দেশের মধ্যে কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা এবং ঢাকা-শিলং-গোহাটি নতুন এই দু’টি রুটে বাস চলাচল সেবা গত ৬ জুন উদ্বোধন করা হয়।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ঢাকা সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে দুইদেশের মধ্যে নতুন রুটে বাস চলাচল সেবা উদ্বোধন করেন।বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান জানান, নতুন রুটে বাস চলাচল সেবার বিষয়টি দুই দেশই অনুমোদন করেছে এবং এর উদ্বোধনও হয়েছে।কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে এই সেবা চালু করতে হলে যেসব প্রস্তুুতির প্রয়োজন তা এখনো শেষ হয়নি।একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দুইদেশের মধ্যে নতুন রুটে বাণিজ্যিকভাবে বাসসেবা চালু করতে ভিসা, টিকেটের মূল্য, বাস কাউন্টার, রুটের মধ্যবর্তী স্থানে বাস স্টপেজের অবকাঠামো উন্নয়ন, নিরাপত্তাসহ একাধিক বিষয়ের কাজ এখনো শেষ হয়নি।আবার নতুন রুটের চলাচল উপযোগী বাসও ঠিক করা হয়নি।ঢাকা-শিলং-গোহাটি এই রুটের সেবা পেতে হলে ভারতের গ্রাহককে কলকাতা থেকে বাংলাদেশের ভিসা নিয়ে এই রুটের সেবা পেতে হবে।কেননা শিলং বা গোহাটিতে বাংলাদেশের কোনো কনস্যুলার সার্ভিস বা ভিসা সেবা কেন্দ্র নেই।শিলং-গোহাটি রুটটি পার্বত্য অঞ্চল এবং ওই অঞ্চলে আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের তৎপরতা থাকায় নিরাপত্তার সমস্যা রয়েছে।এছাড়া ভারত অংশের এই রুটের সড়ক সরু।এক্ষেত্রে সড়ক সংস্কার করতে হবে অথবা বিশেষ বাসসেবা দিতে হবে।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শিলংয়ে বাংলাদেশের ভিসা সেবাকেন্দ্র খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে কাজও চলছে।অচিরেই তা বাস্তবায়ন করা হবে।শিলং ও গোহাটিতে নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না, ভারত এই বিষয়ে নিশ্চয়তা দিয়েছে।আর ওই রুটের সড়ক সংস্কারের কাজও ভারত দ্রুত শেষ করবে বলে ঢাকাকে জানিয়েছে।বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন সূত্র জানায়, নতুন সেবা পেতে ভারতের চাহিদা অনেক বেশি। কিন্তু ভিসা জটিলতা সহজ না হলে এই সেবা চালু রাখা কঠিন হবে।এরই মধ্যে অন অ্যারাইভাল ভিসার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।সামনের বৈঠকগুলোতে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।জামাল হোসেন/ এমএএস
Advertisement