রাজনীতি

‘জনগণ ক্ষমতার মালিক দিবস’ পালনের প্রস্তাব ড. কামালের

‘জনগণ ক্ষমতার মালিক দিবস’পালন করার প্রস্তাব দিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

Advertisement

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি আয়োজিত আলোচনা সভায় এ প্রস্তাব দেন তিনি।

আলোচনা সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ড. কামাল বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায়, গ্রামের বাড়িতে সবাইকে বলেন যে, মার্চ মাসের যেকোনো একটা দিনে সারাদেশে আমরা অবস্থান করি যে জনগণ ক্ষমতার মালিক দিবস। এটা আমার পরামর্শ বা উপদেশ বলতে পারেন। আমাদের মালিকানা কেউ নিতে পারে নাই, কেউ নিতে পারবে না। আমরা সবাই মালিক হিসেবে পাড়ায়-পাড়ায়, মহল্লায়-মহল্লায়, থানায়-থানায়, জেলায়-জেলায় জনগণ ক্ষমতার মালিক দিবস পালন করি। দেখি না কে কী করে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি ক্ষমতার মালিক হিসেবে দিবসটা পালন করি, আমরা মালিক হিসেবে শুধু আমাদের অধিকারের কথা বলব না, মালিক হলে তো দায়িত্ব থাকে। আমাদের যেমন ভোটের অধিকার আছে, আইনের শাসন দেশে থাকুক-এটা দাবি করার অধিকার আছে। পাশাপাশি আমাদের কর্তব্য আছে, যারা আমাদের এ অধিকারকে স্বীকার না করে তাদের ব্যাপারে মানুষকে বুঝিয়ে বলার।’

Advertisement

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ এ নেতা আরও বলেন, ‘এরা (সরকার) কীসের শক্তিতে বলে আমরা ক্ষমতার মালিক? বিরোধীদের জেলে দিতে দিতে তো আর জায়গা নেই। এটা একটা সুখবর! পত্রিকায় এসেছে, জেলে রাখার জায়গার দুইগুণ হয়ে গেছে। এখন প্রস্তাব আছে নতুন জেল তৈরি করার। একটা জেলখানা তৈরি করতে দুই এক বছর লাগবে। সরকারের একটা মহা সমস্যা হয়ে গেছে যে জেলখানায়ও রাখার জায়গা নেই।’

জেলে রাখার হুমকির কোনো অর্থ নেই মন্তব্য করে ড. কামাল বলেন, ‘দায়িত্বে থেকে ৩০ তারিখের পর একটা ভুয়া কথা যারা ঘোষণা করে তাদের জন্য দুঃখ করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। শুধু দুঃখ করা নয়, আল্লাহর কাছে আমরা প্রার্থনা করি যে এদের সুস্বাস্থ্য দাও। এদের অসুখ। যারা এই কথাগুলো বলে তারা অসুস্থ। আর তাদের বলি, দেখুন চিন্তা-ভাবনা করে কথা বলুন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, যারা মানুষকে বঞ্চিত করে রাখতে চায়; তাদের একটা সমস্যা হয়ে গেছে যে আমরা বেঁচে আছি। আমাদের তো ঘোল খাওয়াতে পারে না। আমরা যখন বলি জনগণ এ দেশের মালিক, এ দেশের ১৬ কোটি মানুষই হলো মালিক-এইটাকে কী দিয়ে তারা কাটবে? কোনো কিছু দিয়ে তো কাটতে পারে না। এ দেশ তো রাজতন্ত্র না যে অমুকের সন্তান, অমুকের কন্যা বলে এইটাকে রাজত্ব করবে।’

গণফোরাম সভাপতি বলেন, ‘এখানে মঞ্চে যারা বসে আছেন যদি সবাই নামেন। আমি বিশ্বাস করি, আপনারা যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন প্রত্যেক শহরে, প্রত্যেক জেলায় মানুষ এভাবে সমবেত হবে। তাদের যদি আমরা এই কথাগুলো বলতে পারি যে আপনারা সবাই ক্ষমতার মালিক আর মালিকের ভূমিকা রাখার জন্য প্রস্তুত। যখনই জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, স্বৈরাচার যতই হুমকি-ধামকি দিয়েছে তাদের বিদায় নিতে হয়েছে, অপমানিত হতে হয়েছে।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ দেশটাকে আমাদের মালিকানার দখলে নেব, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে নেব। সংবিধানের মধ্য দিয়ে দেশকে শাসন করব। ইনশাল্লাহ, যে ঐক্যের ভিত্তিতে দেশ স্বাধীন হয়েছিল সেই ঐক্যের ভিত্তিতে আমরা দেশকে শাসন করব। জনগণ এ দেশে মালিকের ভূমিকায় অবশ্যই থাকবে।’

জেএসডি সিনিয়র সহ-সভাপতি এমএ গোফরানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা সঞ্চালন করেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের (একাংশ) মহাসচিব অ্যাডভোকেট শাহ আহমদ বাদল প্রমুখ।

এইউএ/এনডিএস/পিআর