দেশজুড়ে

ঝড়ের তাণ্ডব

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ওপর দিয়ে বুধবার বিকেলে বয়ে যাওয়া ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে বিধ্বস্ত হয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি, কৃষকের ধানক্ষেত ও অসংখ্য গাছপালা।

Advertisement

ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে গাছপালা ভেঙে বিদ্যুতের খুঁটির ওপর পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। প্রাণহানি না হলেও কয়েকজন নারী-পুরুষ আহত হন। এরই মধ্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দিনভর এসব এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলাজুড়ে পড়ে রয়েছে ঝড়ের চিহ্ন। কারও ঘরের ছাউনি উড়িয়ে নিয়ে পাশে বড় গাছ বা বিদ্যুতের খুঁটিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়। আবার কারও ধানি জমির গাছগুলো শুইয়ে দিয়ে যায় ঝড়। ছোট-বড় গাছ ভেঙে বিদ্যুতের খুঁটি ও সড়কের ওপর পড়ে আছে। বড় বড় বিল্ডিংয়ের ওপর লাগানো বিলবোর্ড ভেঙে পড়েছে। শ্রীপুরজুড়ে পড়ে রয়েছে ঝড়ের তাণ্ডবলীলা।

শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের মাওনা চৌরাস্তায় একটি বহুতল ভবনের ওপর থেকে ইউনিলিভারের বিজ্ঞাপন সংবলিত একটি বিলবোর্ড পড়ে দুইজন গুরুতর আহত হন। এছাড়া জৈনাবাজারের জয়নাল মেম্বারের বহুতল ভবনের ছাদ থেকে পানির ট্যাংক পড়ে আফরোজা (৩৭) ও নজরুল ইসলাম (৪০) নামে দুইজন গুরুতর আহত হন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

Advertisement

শ্রীপুর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সাঈদ চৌধুরী বলেন, উপজেলাজুড়ে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষ যাদের ঘর ভেঙেছে তারা অনেকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে কৃষি কাজ ও অন্যান্য ব্যবসার কাজ করে থাকেন। প্রতি সপ্তাহে কিস্তি দিতে হয়।

উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি আরও বলেন, ছোট ঋণ মওকুফসহ অসহায় পরিবার যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেদিক খেয়াল রেখে ২/৩ সপ্তাহ কিস্তি নেয়া বন্ধ রাখতে হবে।

মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ইউনিয়নের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চকপাড়া, সিঙ্গারদিঘী, বদনীভাঙ্গা, কপাটিয়াপাড়া ও আক্তাপাড়া গ্রামে। কৃষকের রোপণ করা ধানের জমি নষ্ট, ঘরের চাল পর্যন্ত উড়ে যায় ঝড়ে। অনেকের ঘরে থাকার অবস্থা নাই। কোনো কেনো কৃষকের উঠতি ফসল মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ব্যাপারে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।

তেলিহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন সরকার বলেন, ফরিদপুর, মুলাইদ, গোদারচালা গ্রামসহ পুরো ইউনিয়নের রয়েছে ঝড়ের ক্ষতির চিহ্ন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষকদের।

Advertisement

এ ব্যাপারে শ্রীপুর উপজেলার চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারিভাবে সহায়তা দেয়ার কাজ চলছে।

গাজীপুর জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের রিপোর্ট ইতোমধ্যে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দেয়া হয়েছে। অসহায়, হতদরিদ্রদের সহায়তা করা হবে।

শিহাব খান/এএম/পিআর