ম্যাচ শেষে পরিণত হতে পারতেন ভিলেনে। কিন্তু মাত্র ৫ বল, ভিলেন থেকে পুরোপুরি পরিণত করলো তাকে নায়কে। ইংল্যান্ডের সেই নায়কের নাম আদিল রশিদ। তার শেষ মুহূর্তে নায়কোচিত বোলিংয়েই ৪১৮ রান করেও হারতে হারতে বেঁচে গেলো ইংল্যান্ড। জিতলো মাত্র ২৯ রানের ব্যবধানে।
Advertisement
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ছক্কা বৃষ্টির মধ্যে ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে রান ওঠে ৪১৮। মাত্র ৭৭ বলে ১৫০ রান করেন জস বাটলার। পুরো ইনিংসে ২৪টি ছক্কা মারেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা।
জবাব দিতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজও কম যায়নি। বিশেষ করে ক্রিস গেইল। ১৪ ছক্কা আর ১১ বাউন্ডারিতে তিনি ম্যাচটাই ছিনিয়ে নিয়েছিলেন প্রায় ইংল্যান্ডের হাত থেকে। ইংলিশ বোলারদের মধ্যে ততক্ষণে সবচেয়ে খরুচে বোলার হিসেবে নাম লিখে ফেলেছেন দু’জন। ক্রিস ওকস আর আদিল রশিদ।
ক্রিস ওকস ১০ ওভার বল করে দিয়েছেন ৯১ রান। কোনো উইকেট পাননি। আদিল রশিদ ততক্ষণে বল করেছেন ৯ ওভার। রান দিয়েছেন ৮৩টি। উইকেটে নিয়েছেন ১টি।
Advertisement
এমন খরুচে বোলার হওয়ার কারণেও ইনিংসের ৪৮তম ওভারে গিয়ে স্পিনার আদিল রশিদের হাতে বল তুলে দেন ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান। ৩ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন তখন ৩২ রান। উইকেটে তখন সেট হয়ে যাওয়া দুই ব্যাটসম্যান কার্লোস ব্র্যাথওয়েট এবং অ্যাসলে নার্স। যারা আদিল রশিদের ওই এক ওভারেই পারতেন ম্যাচটা শেষ করে দিতে।
কিন্তু আগের ৯ ওভারে যিনি ছিলেন ক্যারিবীয়দের কাছে খরুচে, শেষ ওভারে এসে তিনিই হয়ে গেলেন রীতিমত হন্তারক। তার প্রথম বলেই ক্যাচ তুলেছিলেন অ্যাসলে নার্স। লং-অনে খেলেছিলেন তিনি। ডাইভ দিয়েও বলটি ধরতে পারলেন না বেন স্টোকস। হয়ে গেলো ২ রান।
পরের ৫ বলে রীতিমত তাণ্ডব চালালেন রশিদ। নিলেন ৪ উইকেট। মাঝে একটি বল বিরতি ছিল, না হয় হয়ে যেতে পারতো হ্যাটট্রিকও। ওভারের দ্বিতীয় বলেই আবার ক্যাচ তুলে দিলেন অ্যাসলে নার্স। এবার লিয়াম প্লাঙ্কেট আর ভুল করলেন না। ৪৩ রান করে আউট হয়ে যান নার্স। পরের বলেই কভার অঞ্চলে ইয়ন মরগ্যানের হাতে ক্যাচ তুলে দিলেন কার্লোস ব্র্যাথওয়েট।
ওভারের চতুর্থ বলটি ছিল ডট। কোনো রান নয়, উইকেটও নয়। পঞ্চম বলে দেবেন্দ্র বিশু ক্যাচ তুলে দিলেন। ক্যাচ ধরলেন অ্যালেক্স হেলস। এরপর মাঠে নামেন ওশানে থমাস। এবার একটু এগিয়ে এসে ব্যাট করতে চাইলেন তিনি। ব্যাট মিস করলো ব্যাট। কিন্তু উইকেটরক্ষক মিস করলেন না। স্ট্যাম্প ভেঙে দিলেন। ৫ বলে ৪ উইকেট নিয়ে শেষ মুহূর্তে একাই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে দিলেন আদিল রশিদ।
Advertisement
প্রথম ৯ ওভারে যার ফিগার ছিল ৮৩ রান ১ উইকেট। শেষ ১ ওভারে সেই ফিগার দাঁড়ালো, ১০ ওভার, ৮৫ রান ৫ উইকেট। এমন অবিশ্বাস্য বোলিং করে ম্যাচ সেরা হতে না পারলেও, ইংলিশদের কাছে আদিল রশিদই হয়ে গেলেন আসল নায়ক।
আইএইচএস/জেআইএম