অর্থনীতি

উত্তপ্ত বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতায় বাকবিতণ্ডা

মামা ঢেড়স কতো? ৬০ টাকা। কাকরোল? ৬০ টাকা, বেগুন (লম্বা) ৫০, গোল বেগুন ৬০ টাকা। কেন মামা এতো কেন? কম হবে না? না কম হবে না। দুই দোকান ফিরে এসে আবারো দাম দর। কেন মামা গলা কাটা দাম কেন চান? বিক্রেতার উত্তর নিলে নেন না নিলে যান। দামাদামির এক পর্যায়ে শুরু হয় ক্রেতা-বিক্রেতার বাকবিতণ্ডা।শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় মিরপুর কল্যাণপুরের নতুন বাজারের চিত্র এটি। এভাবেই শুধু কল্যাণপুরের নতুন বাজার নয়, রাজধানীর প্রায় সব সবজি বাজারেই দাম কষাকষি নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতায় বাকবিতণ্ডা চলছে। আব্দুল বারেক। চাকরি করেন বিদ্যুৎ অফিসে। তিনি সপ্তাহে এক দিন সবজি বাজার  করেন। কিন্তু গত ২ সপ্তাহ কাজের কারণে বাজারে আসতে পারেন নি তিনি। সকালে নতুন বাজারে এই প্রতিবেদককে বলেন, আলু আর কচু বাদে প্রায় সব জিনিসের দাম ৫০ টাকার উপরে। কি করবো বলেন, করি সরকারি চাকুরি, বউ বাচ্চা, ভাই বোন নিয়ে ঢাকার ভাড়া বাসায় থাকি। বাজারের যে অবস্থা! সংসার নিয়ে চলা কঠিন হয়ে গেছে। সবজির দামে ঊর্ধ্বগতি কমছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোনো জিনিসের দাম বাড়লে আর কমে না। বেরসকারি কলেজ শিক্ষক আলতাফ হোসেন এক রকম চটেই গিয়ে বলেন, আলু ২০ টাকা, (সাদা), লাল আলু ২৬ টাকা। আর কচু ৩০ টাকার। এর বাইরে আপনি সাধ্যের মধ্যে কিছুই কিনতে পারবেন না। এক রকম বাধ্য হয়েই কিনতে হবে। এভাবে কি চলা যায়? রাজধানীর কল্যাণপুর ‘নতুন বাজার’ সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কমেনি কোনো সবজির দাম। বরং কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে।পেয়াজের ঝাঝ রয়েছে আগের মতোই ৯০ থেকে ১০০ টাকা। মরিচে ঝাল বা কম কিসে। দামে তাই প্রমাণ মিলছে। আড়াই শ’ গ্রাম মরিচ ৩৫ টাকা। কেজি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। চিচিঙ্গার দাম ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। একইভাবে ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা। ঢেড়স যেন আর ঢেড়স নেই ৬০ টাকার নিচে মিলছে না। শশার দরেও একই হাল। বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। পটল ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি লাল আলু ২৬ টাকা, পেঁপে আর পেপে নেই। পেঁপের দাম বেড়ে হয়েছে ৪০ টাকা কেজি। কচুর লতি ৪০ টাকা, কচু সবজি ৫০ টাকা, টমেটো ৫০ থেকে ৭০ টাকা, কাঁচাকলা হালি ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পিস প্রতি জালি কুমড়া ৪০ এর নিচে মিলছে না। তবে মিষ্টি কুমড়ার কেজি প্রতি ৩০ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৫০ টাকা। দেশি রসুন ১৩০ টাকা এবং ইন্ডিয়ান রসুন ১০০ টাকা দামে পাওয়া যাচ্ছে। ডিমের দামেও কমতি আসে নি। ব্রয়লার মুরগীর ডিম প্রতি হালি ৪০ টাকা। পাইকারি দাম ৩৮ টাকা। দেশি মুরগির ডিম ৪৫ টাকা ও হাঁসের ডিমের হালি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গরু মাংস ৪০০ টাকা, মুরগি ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা, দেশি মুরগি ৪০০ টাকা কেজি, আর পাকিস্তানি মুরগি ৩৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সবজী বিক্রেতা আবুল মিয়া বলছেন, পেয়াজের আমদানি নাই। বৃষ্টির কারণে মরিচসহ অধিকাংস সবজির ফলন কমে যাওয়ায় যোগানও কম। আমরা পাইকারিতেই বেশি দিয়ে কিনছি। তাই খুচরা বাজারে দাম বেশি পড়ছে।জেইউ/এসকেডি/এমএস

Advertisement