বৈরী আবহাওয়া ও ঢাকা সিটি নির্বাচন উপলক্ষে সাধারণ ছুটি থাকায় বৃহস্পতিবারের (২৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা আইনজীবী সমিতির দ্বিতীয় দিনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছেন নির্বাচন কমিশন। বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশনের সাধারণ সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
Advertisement
নির্বাচন কমিশনার মোখলেছুর রহমান বাদল জানান, বৈরী আবহাওয়া ও ঢাকা সিটি নির্বাচন উপলক্ষে সাধারণ ছুটি থাকায় বৃহস্পতিবারের (২৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা আইনজীবী সমিতির দ্বিতীয় দিনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই পরবর্তী ভোটগ্রহণের তারিখ জানানো হবে।
তবে কমিশনের একটি সূত্রে জানা যায়, আগামী ৭ মার্চ দ্বিতীয় দিনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আজ বুধবার বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে এশিয়ার বৃহত্তম আইনজীবী সমিতি ঢাকা আইনজীবী সমিতির (বার) ২০১৯-২০ কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ প্রথম দিনের মতো শেষ হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোটগ্রহণ চলে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। এর মাঝে এক ঘণ্টা বিরতি ছিল। প্রথম দিনে ভোট দিয়েছেন ৪ হাজার ৬ শত ৪৬ জন। আর এর মধ্যে চারটি ভোট নষ্ট হয়েছে। এবারে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ১৭ হাজার ৮৯৭ জন।
Advertisement
এবার নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বারের সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমান বাদল। তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেল এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের মোট ২৭টি পদে দুইজন করে ৫৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২৪ হাজার ৬৮৪ জন সদস্যের মধ্যে ১৭ হাজার ৮৯৭ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।’
নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার ব্যাপারে উভয়পক্ষই আশাবাদী। এ সম্পর্কে সাদা প্যানেলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমিতির সাবেক সভাপতি কাজী নজিউল্ল্যাহ হিরু বলেন, ‘আমাদের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। একসঙ্গে সবাই কাজ করছি। আশা করছি আমরা অধিকাংশ পদেই জয়লাভ করব।’
এ সম্পর্কে নীল প্যানেলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমিতির প্রাক্তন সভাপতি মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। তাই আশা করছি, গতবারের ফলাফলের চেয়ে এবার ফলাফল অনেক ভালো হবে।’
নীল প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন- সভাপতি পদে মো. ইকবাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক পদে মো. হোসেন আলী খান হাসান। অন্যদিকে সাদা প্যানেলে সভাপতি পদে গাজী শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক পদে মো. আসাদুজ্জামান খান রচি।
Advertisement
নীল প্যানেলের অপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম দেওয়ান, সহ-সভাপতি পদে এ আর মিজানুর রহমান, ট্রেজারার পদে মো. লুৎফর রহমান আজাদ, সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে মো. নিহার হোসেইন ফারুক, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে মো. সাখাওয়াত উল্লাহ ভূঁইয়া ছোটন, গ্রন্থাগার সম্পাদক পদে মো. জিয়াউল হক জিয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মোরশেদা খাতুন শিল্পী, দফতর সম্পাদক পদে মো. জুলফিকার আলী হয়দার জীবন, খেলাধুলা সম্পাদক পদে মো. মনিরুল ইসলাম আকাশ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক পদে মাহবুব হাসান রানা।
সদস্য পদে আজহার উদ্দিন রিপন, কাজী রাওশান দিল আফরোজ, এম আর রাসেল, মো. বাবুল আক্তার, মো. ইব্রাহিম খলিল, মো. ইকবাল মাহমুদ সরকার, মো. মেহেদী হাসান জুয়েল, মো. রাসেদুল ইসলাম রাসেল, মোহাম্মাদ ইব্রামি (স্বপন), মোহাম্মাদ মোস্তফা কামাল, মো. ইয়াছিন মিয়া, মোছা. ফারহানা আক্তার লুবনা, নজরুল হক সুভা, শাহীন সুলতানা খুকি ও সাদেকুল ইসলাম ভূঁইয়া জাদু।
সাদা প্যানেলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে মোহাম্মাদ হাবিবুর রহমান, সহ-সভাপতি পদে মো. জাহাঙ্গীর হোসেন দুলাল, ট্রেজারার পদে আব্দুল জলিল আফরাদ (কবির), সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে মোহাম্মাদ ওমর ফারুক আসিফ, গ্রন্থাগার সম্পাদক পদে মো. আতাউর রহমান খান রুকু, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে শায়লা পারভীন পিয়া, দফতর সম্পাদক পদে মো. জাহিদুল ইসলাম কাদির, ক্রীড়া সম্পাদক পদে মো. উজ্জ্বল মিয়া ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে হুমায়ুন খন্দকার টগর।
সদস্য পদে আয়েশা বিনতে আলী, এএইচএম শফিকুল ইসলাম মোল্লা সোহাগ, হোয়াত আল মাহমুদ জিকু, কাওছার হাসান, মো. সাব্বির হাসান, মো. বাহারুল ইসলাম বাহার, মো. হাসান আকবার আফজাল, মো. ইব্রাহিম হোসেন, মো. জুয়েল শিকদার, মো. মাসুম মিয়া, মো. মাসুম মৃধা, সাইফুল ইসলাম, সৌরভ হোসেন, তানভীর আহমেদ সজিব ও তুষার ঘোষ।
২০১৮-১৯ কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী সমর্থিত আইনজীবীদের সাদা প্যানেল বিজয় লাভ করে। এতে ২৭টি পদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদকসহ ১৪টি পদেই জয়ী হন আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা। অপরদিকে সভাপতি পদসহ ১৩ পদ পেয়েছেন বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীরা।
২০১৭-২০১৮ কার্যবর্ষের নির্বাচনে ২৭টি পদের মধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২১টি পদে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেল জয়লাভ করে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল মাত্র ৬টি পদে জয়লাভ করে।
২০১৬-১৭ মেয়াদের কার্যকরী কমিটি নির্বাচনে ২৭টি পদের মধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২১টি পদেই জয়ী হন আওয়ামী সমর্থীত আইনজীবীরা। অপরদিকে বিএনপি সমর্থীত নীল প্যানেল পেয়েছিলেন ৬টি পদ।
জেএ/বিএ