পুরান ঢাকার বিভিন্ন ভবনে রক্ষিত কেমিক্যাল অন্তর্বর্তীকালীনের জন্য রাজধানীর শ্যামপুর এবং টঙ্গীতে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
Advertisement
কদমতলী থানার শ্যামপুর মৌজায় অবস্থিত বিসিআইসি’র উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরি এবং ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে টঙ্গীর কাঁঠালদিয়া মৌজায় বিএসইসি’র খালি জায়গায় এগুলো সরিয়ে নেয়া হবে। প্রাথমিকভাবে দু’টি স্থান মিলিয়ে ১২ দশমিক ১৭ একর জমির ওপর ৪ লাখ বর্গফুট আয়তনের স্টিল সেড নির্মাণ করে এগুলো সংরক্ষণ করা হবে।
বুধবার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন ভবনে রক্ষিত দাহ্য কেমিক্যাল নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন শিল্পসচিব মো. আবদুল হালিম। সভায় শিল্প, ভূমি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ, কৃষি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রাজউক, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, বিসিআইসি, বিএসইসি, বিএডিসি, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি এবং কেমিক্যাল ও প্লাস্টিক সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
সভায় পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে সাময়িক সময়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে উপযুক্ত স্থান নির্ধারণের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ব্যবসায়ী নেতাদের আগামীকালের (বৃহস্পতিবার) মধ্যে তাদের কেমিক্যাল সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় জায়গার পরিমাণ নির্ধারণ করে লিখিতভাবে শিল্প মন্ত্রণালয়কে জানানোর পরামর্শ দেয়া হয়। এ সময় রাজধানীর শ্যামপুর এবং টঙ্গীর নিরাপদ স্থানে এগুলো সরানোর বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভায় কেমিক্যাল ও এসিড ব্যবসায়ীরা বলেন, চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের পর কেমিক্যাল ইস্যুতে স্থানীয়ভাবে এক ধরনের ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে পুরান ঢাকার প্রায় ২৫ লাখ ব্যবসায়ী বেকার হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তারা। ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিদ্যমান ভীতি দূর করতে সরকারের সহায়তা কামনা করেন। সাময়িকভাবে টঙ্গীতে নির্ধারিত জায়গায় এসিড ও শ্যামপুরের জায়গায় কেমিক্যাল সরানোর বিষয়ে তারা একমত পোষণ করেন।
শিল্প সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী রাজধানী ঢাকা থেকে নিরাপদ স্থানে কেমিক্যাল স্থানান্তরের বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এগুলো স্থানান্তরের জন্য ব্যবসায়ীদের জায়গা করে দেয়া হবে। জননিরাপত্তার স্বার্থে অন্তবর্তীকালীনের জন্য এসিড ও কেমিক্যাল স্থানান্তর এবং সংরক্ষণের জন্য দু’টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। আরও জায়গা প্রয়োজন হলে, শিল্প মন্ত্রণালয় তারও ব্যবস্থা করবে।
তিনি আরও বলেন, টঙ্গী ও শ্যামপুরে সরকারের খরচেই স্টিল স্ট্রাকচার নির্মাণ করে দেয়া হবে। তবে ব্যবসায়ীরা সেখানে যৌক্তিক ভাড়ায় কেমিক্যাল সংরক্ষণ করবেন।
Advertisement
আগামী তিন দিনের মধ্যে কমপ্লায়েন্ট মেনে এ বিষয়ে কারিগরি প্রস্তাব প্রণয়নের জন্য বিএসইসি এবং বিসিআইসিকে নির্দেশনা দেন তিনি।
এসআই/জেএইচ/এমকেএইচ