সব ধরনের চাকরিতেই ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। বেশিরভাগ অভিজ্ঞরা চাকরির ভাইভা বা সাক্ষাৎকারে সাবলীল থাকেন। তবে নতুনদের জন্য সাক্ষাৎকার অনেকটা ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই নতুন বা ফ্রেশারদের চাকরির সাক্ষাৎকারের খুটিনাটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন নিও ডি কস্তা—
Advertisement
নিজেকে প্রস্তুত করুন: যখন চাকরির আবেদন করেন, তখন আপনার সময় নষ্ট করবেন না। এছাড়া নিয়োগকারীর বিরক্তির কারণ হবেন না। পরিবর্তে, নিজেকে প্রস্তুত করুন এবং নিয়োগকারীর চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা করুন। একজন মানবসম্পদ কর্মকর্তা কী আশা করেন একজন ফ্রেশারের কাছ থেকে। এ নিয়ে বহু আলোচনা হতে পারে, একেক প্রতিষ্ঠান একেক কাজের জন্য চাহিদা ভিন্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে মূল কিছু চাহিদা আছে, যা সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
চাকরি সম্পর্কে ধারণা: যদি অনেক চাকরি সন্ধান করেন, তবে আপনার পাঠানো সব আবেদনপত্র ট্র্যাক রাখা কঠিন হতে পারে। আবেদনকৃত চাকরির ব্যাপারে মনে রাখার জন্য একটি কাজের বিবরণসহ পাঠানো আবেদনপত্রের তালিকা রাখুন। যখন নিয়োগকর্তা আপনাকে কল করবেন; তখন আপনি জানবেন কোন আবেদনের প্রেক্ষিতে কী বলছেন। অনেক সময় নিয়োগকর্তা প্রাথমিক সাক্ষাৎকারের অংশ হিসেবে আবেদনকারীকে ফোন করতে সময় ব্যয় করেন। তখন অনেক আবেদনকারী ভুলে যান যে, তারা কোন পদের চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন অথবা তারা কোন কোম্পানিতে আবেদন করেছিলেন।
> আরও পড়ুন- কর্মজীবীদের জন্য সংবাদ উপস্থাপনার সুযোগ
Advertisement
প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানুন: এটি প্রাথমিক কাজ, যা বেশিরভাগ আবেদনকারী অনুসরণ করেন না। বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায় যে, তারা কল করার আগে অথবা সাক্ষাৎকারের আগে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা রাখেন না। কেননা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস, পণ্য বা সেবা, প্রতিষ্ঠানের ভালো কোন খবর জানা, ভাইভায় দুর্দান্ত ছাপ তৈরি করার শ্রেষ্ঠ উপায়। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে আঙুলের ছোঁয়ায় চাইলেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নিতে পারেন। খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন পরিচিত কেউ কর্মরত আছেন কিনা। তার কাছ থেকেও ধারণা নিতে পারেন।
নিজের সম্পর্কে বলুন: সাক্ষাৎকারের সময় চাকরিদাতা আপনাকে নিজের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছে, তিনি কীভাবে কোম্পানির সমস্যার সমাধান করতে পারেন। সাক্ষাৎকারের সময় উত্তর দেওয়া প্রতিটি প্রশ্নের সমাধান হওয়া উচিত যে, তাকে নিয়োগ করা হলে প্রতিষ্ঠানের কোন সমস্যাগুলো সমাধান করা যাবে। সাক্ষাৎকারের একটি বহুল প্রচলিত প্রশ্ন, ‘নিজের সম্পর্কে বলুন’। এর মানে হলো- আপনার সম্পর্কে এমন কিছু বলুন, যা প্রতিষ্ঠানের সমস্যা সমাধান করতে পারে।
চাকরিদাতা আপনাকেও খুঁজছে: জেনে রাখুন, আপনার যদি অনলাইনে উপস্থিতি থাকে তবে আপনার সম্ভাব্য নিয়োগকর্তা এতে আগ্রহী হয়ে আপনাকে খুঁজছেন। আবেদনকারীর অবশ্যই জানা উচিত যে, নিয়োগকর্তা এবং আবেদনকারী উভয়ই তাদের অনলাইনে অনুসন্ধান করছেন। যে কোন সামাজিক মিডিয়া কিংবা প্রফেশনাল সাইট পাশাপাশি অনলাইন রিজুইমি বা প্রোফাইলের মাধ্যমে নিয়োগকর্তা তার নিয়োগের জন্য সম্ভাব্য ব্যক্তিকে অনুসন্ধান করে থাকেন। আপনার যে কোন তথ্য কোনও সম্ভাব্য নিয়োগকর্তাকে সরবরাহ করেন। এমন তথ্য অনলাইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা নিশ্চিত করুন। অবশ্যই বুঝতে হবে, অনলাইনে ক্রমাগত নেতিবাচক কার্যক্রম তাদের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। নিয়োগকর্তা সবসময় এমন লোককে সন্ধান করছেন, যে তাদের দলের অংশ হতে চায়।
> আরও পড়ুন- বিনামূল্যে তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণ নিতে চাইলে
Advertisement
প্রাথমিক প্রস্তুতি: প্রার্থীরা সবসময় প্রাথমিক চাকরি-অনুসন্ধান টিপসকে উপেক্ষা করেন। প্রার্থীরা প্রায়ই সিভি বা রিজুইমির ফরমেটে ভুল, সাক্ষাৎকারে দেরি করা, কিংবা সাক্ষাৎকারে অপ্রাসঙ্গিক তথ্য দেন। নিয়োগকর্তা প্রার্থীর কাছ থেকে জানতে চান যে, তারা যেভাবে কাজ করে তা কর্মচারী হিসাবে কেমন হবে। এছাড়াও পোশাকের রুচি, নোট নিতে কলম-কাগজ, সিভি বা রিজুইমির কপি, সময়মত সাক্ষাৎকারে আসা, ব্যবহার– এসব খুটিনাটি ব্যাপারগুলো নিয়োগকর্তা লক্ষ্য করে থাকেন। তিনি আশা করেন, প্রার্থী এসব ব্যাপারে অবগত থাকবেন এবং সবকিছু গুছিয়ে একটি সফল সাক্ষাৎকারে অংশ নেবেন। সব আবেদনকারীই শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন। তবে নিয়োগকর্তা তাকেই খুঁজছেন, যিনি যোগ্যতা সম্পন্ন, কাজ করার জন্য প্রস্তুত। তাকে নিয়োগ করা হলে প্রতিষ্ঠানের সমস্যাগুলো সমাধান করা যাবে।
লেখক: এইচআর প্রফেশনাল।
এসইউ/এমএস