পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার বারো দিনের মাথায় পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে জঙ্গিগোষ্ঠী জয়েশ-ই-মোহাম্মদের আস্তানায় ২১ মিনিটের অভিযান পরিচালনা করেছে ভারতীয় বিমান বাহিনী। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিজয় কেশব গোখেল বলেছেন, ভারত ‘বেসামরিক এবং সতর্কতামূলক’ পদক্ষেপ হিসেবে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের বালাকোটে জয়েশ-ই-মোহাম্মদের একটি প্রধান ঘাঁটিতে অভিযান চালানো হয়েছে।
Advertisement
১৯৭১ সালের পর পাকিস্তানের আকাশে ঢুকে এটাই ভারতের বিমান বাহিনীর প্রথম অভিযান। ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারি বাজপেয়ী পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে আকাশপথে হামলা পরিচালনা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ওই সময় ভারত নিজেদের আকাশসীমায় থেকে যুদ্ধবিমান মিরাজ-২০০০ ব্যবহার করেছিল কার্গিল পাহাড়ে।
গোখেল বলেছেন, আমাদের কাছে নির্ভরযোগ্য তথ্য ছিল যে, জয়েশ-ই-মোহাম্মদের সদস্যরা ভারতে ফের হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। সে জন্যই জয়েশের বৃহত্তম এই ঘাঁটিতে অভিযান চালানো জরুরি হয়ে পড়েছিল।
আরও পড়ুন : পাকিস্তানে ভারতের হামলায় নিহত ৩০০ : ইন্ডিয়া ট্যুডে
Advertisement
ভারতীয় এই পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ভোরের এই অভিযানে জয়েশ-ই-মোহাম্মদের অনেক জঙ্গি, প্রশিক্ষক এবং সিনিয়র কমান্ডার নিহত হয়েছে। এই জঙ্গি ঘাঁটিটি চালাতো জয়েশের প্রধান মাসুদ আজহারের শ্যালক মাওলানা ইউসুফ আজাদ।
ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই বলছে, ভারতীয় বিমানবাহিনীর মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমানের অভিযানে নিয়ন্ত্রণরেখার আশপাশে বেশ কিছু জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর দাবি করেছেন, ভারতীয় সামরিক বিমান তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করার পর পাকিস্তানি জঙ্গি বিমানের ‘তাড়া খেয়ে পালানোর’ আগে বালাকোটের কাছে ‘বোমা ফেলে’ গেছে।
এএনআই বলছে, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমানের একটি স্কোয়াড্রনের হানায় নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বড় জঙ্গি ঘাঁটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ১২টি মিরাজ বিমান এই অভিযানে অংশ নিয়েছিল। অভিযানে জঙ্গি ঘাঁটির উপর ফেলা হয়েছে এক হাজার কেজি ওজনের বোমা।
আরও পড়ুন : ভারতের সব বিমানবন্দরে উচ্চ সতর্কতা
Advertisement
এদিকে, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেছেন দিল্লির ৭, লোককল্যাণ মার্গে। দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি বৈঠক করেছে। এএনআই বলছে, ভারতীয় বিমানবাহিনী নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ‘উচ্চ সতর্কতা’ জারি করেছে এবং পাকিস্তানের সম্ভাব্য প্রত্যাঘাতের প্রতিরোধে আকাশপথে যাবতীয় সমরসজ্জা সুসংহত করেছে।
দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত এ বিষয়ে প্রথম টুইট করেছেন। ভারতের বিরোধীদল কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল টুইট করে কাশ্মীরে অভিযানের জন্য ভারতীয় বিমান বাহিনীর অভিনন্দন জানিয়েছেন।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
এসআইএস/জেআইএম