জাতীয়

আর কোনোদিন ফিরবে না জেনেও চুড়িহাট্টায় ছুটে আসেন তারা

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ছয়দিন পেরিয়ে গেলেও নিহতদের স্বজনরা এখনও প্রতিদিনই ছুটে আসছেন চকবাজারের চুড়িহাট্টায়। ধ্বংসস্তুপের সামনে কখনও নিরবে দাঁড়িয়ে, কখনও উচ্চ শব্দে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। আবার কখনও স্বাভাবিকভাবে নিহতদের স্মৃতির কথা উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মী ও এলাকাবাসীকে জানাচ্ছেন তারা।

Advertisement

ভয়াবহ আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়ায় যারা মরদেহ শনাক্ত করতে পারেননি কিম্বা খুঁজে পাননি তাদের কষ্টটা একটু বেশি। তাদেরই একজন নিহত নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বিবিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র রোহানের পরিবার।

সোমবারও (২৬ ফেব্রুয়ারি) তার বাবা, নানা ও ছোট ভাই এসেছিলেন স্পটে। মরদেহ খুঁজে না পাওয়ায় ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্তের অপেক্ষায় দিন গুনছেন তারা।

চুড়িহাট্টায় আসার কারণ জানতে চাইলে তার নানা ইউনুস খান সামনের একটি ভস্মিভূত মোটরসাইকেল দেখিয়ে বলেন, এইটা আমার নাতির মোটরসাইকেল। এ মোটরসাইকেলের ওপরই সে তার এক বন্ধুকে নিয়ে বসেছিল।

Advertisement

তিনি জানান, রোহানরা পুরান ঢাকার আগামাসি লেনের বাসিন্দা। বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ফিরে দুটি মোটরসাইকেলে মোট পাঁচ বন্ধু চা খেতে চুড়িহাট্টায় আসেন। অগ্নিকাণ্ডে অন্যরা বেঁচে গেলেও প্রাণ হারায় রোহান।

রোহানের স্কুল পড়ুয়া ছোট ভাই জানায়, এ মোটরবাইকটি ভাইয়ার (রোহান) খুব শখের ছিল। এ বাইকে বসেই তার মৃত্যু হলো। ভাইয়ার মরদেহটি কি পাবো না। রোহানের বাবা বললেন, ছেলেটি যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক এটাই কামনা।

নিহতদের মধ্যে আরেক যুবক এনামুল হকের বোন রোজিনা। প্রতিদিনই কেরানীগঞ্জ থেকে ছুটে আসেন। ভাইয়ের মরদেহ না পাওয়ার বেদনা তাকে ভীষণ কষ্ট দেয় বলে জানান। গণমাধ্যম কর্মী দেখলেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ভাইটা কি বাঁইচ্যা আছে? আগুনে পুড়ে থাকলে না জানি কত কষ্ট পাইছে।’

এমইউ/এএইচ/এমকেএইচ

Advertisement