প্যারিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্টদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন বলেছেন, ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ সেই দেশ যারা ভাষার জন্য সংগ্রাম করেছে, তাই মাতৃভাষার গুরুত্ব বাংলাদেশের কাছে অপরিসীম।’
Advertisement
বাংলাদেশ দূতাবাস, প্যারিস যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষে সকালে দূতাবাসে প্রবাসী বাংলাদেশি ও দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়।
এরপর রাষ্ট্রদূত ইউনেস্কো আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আনুষ্ঠানিক আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত ছাড়াও ইউনেস্কোর উপ-মহাপরিচালক (শিক্ষা) উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রদূত প্যারিসের দুটি ভিন্ন স্থানে প্রবাসীদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন ও অস্থায়ীভাবে স্থাপিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। বিকেলে দূতাবাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে দূতাবাস প্রাঙ্গণে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপর বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দলের সদস্যরা শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। অনুষ্ঠানের এ পর্বে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত এবং শ্রীমদ্ভগবতগীতাসহ অন্যান্য পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ ১৯৫২ সালের ভাষা শহীদদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
Advertisement
দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের একটি বড় অংশজুড়ে ছিল অতিথিদের অংশগ্রহণে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর আলোচনা। আলোচনা পর্বে বক্তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রাম এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদ গঠনে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যের শুরুতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী ও সাহসী নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।’ তিনি ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে শহীদ দিবস-এর তাৎপর্য তুলে ধরেন।
১৯৫২ থেকে ১৯৭১ সময়কালে শহীদ উদযাপন, ১৯৭১ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত স্বাধীনতা পরবর্তী যুগে শহীদ দিবস উদযাপন এবং ২০০০ সাল থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে উদযাপন- প্রতিটি ক্ষেত্রই আলাদা গুরুত্ব বহন করে। তিনি পরবর্তী প্রজন্মের কাছে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে অভিভাবকদের নিকট আহ্বান জানান।
এমআরএম/পিআর
Advertisement