জাতীয়

চকবাজার ট্র্যাজেডি : ১৫ দিনের মধ্যে ১৪ মরদেহ শনাক্ত

রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার চুরিহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে মারা যাওয়া ৬৭ জনের মধ্যে ১৯ জনের মরদেহ শনাক্ত করা যায়নি। ১৯ মরদেহ শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষার কাজ করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

Advertisement

সিআইডি বলছে, ১৯ মরদেহের বিপরীতে এ পর্যন্ত লাশের দাবিদার হিসেবে পরিবারসংশ্লিষ্ট ৩৮ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

১৯টি মরদেহের মধ্যে ১৪টি মরদেহ শনাক্ত করতে সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মতো সময় লাগবে। বাকি ৪টি মরদেহের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে অন্তত তিন সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।

আজ (সোমবার) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডি অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘৬৭টি মরদেহের মধ্যে ১৯টি মরদেহ এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। বাকিদের মরদেহ শনাক্ত করে জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। একই মরদেহের একাধিক দাবিদার হিসেবে ১৯টি মরদেহের বিপরীতে ৩৮ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।’

সিআইডির এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এর মধ্যে ১৪টি মরদেহের মাসল, রক্ত নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করা হয়েছে। যেগুলোর পরিচয় নিশ্চিত হতে সর্বোচ্চ ১৫ দিন সময় লাগবে। বাকি ৫টি মরদেহের অবস্থা খুবই খারাপ হওয়ায় সেগুলোর মেরুদণ্ড ও ঘারের হাড়ের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো থেকে স্যাম্পল সংগ্রহের পর্যায়ে আসতেই অন্তত তিন সপ্তাহ সময় লাগবে। এরপর ডিএনএ ম্যাচিংয়ের বিষয়টি আসবে।’

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থলে সিআইডি কোনো পরীক্ষা করবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের মহাখালীতে কেমিক্যাল ল্যাব রয়েছে। সংশ্লিষ্ট তদন্ত দফতর ফায়ার সার্ভিস যদি আমাদের সহায়তা চায় তাহলে সেসব পরীক্ষায়ও সহায়তা করবে সিআইডি।’

পরবর্তীতে কোনো পরিবার লাশের দাবি জানানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘৬৭টি মরদেহের স্যাম্পলই আমাদের কাছে রয়েছে এবং এটা যুগ যুগ ধরে সংরক্ষিত থাকবে। কোনো পরিবার যদি পরবর্তীতে দাবি জানায় তাহলে তখন পরীক্ষা করা হবে, তবে এ চ্যালেঞ্জের বিষয়টি অবশ্যই আদালতের মধ্য দিয়ে আসতে হবে।’

Advertisement

এর আগে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রুমানা আক্তার বলেন, ‘চকবাজার অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিচয় শনাক্তে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ শুরু করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ থেকে ৬৭টি মৃতদেহ থেকে ২৫৬টি (রক্ত, টিস্যু, হাড় ও বাক্কাল সোয়াব) ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে। পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি একটি বিচ্ছিন্ন হাতকে পৃথক আলামত হিসেবে গণ্য করে সেটি থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ফলে মোট সংগৃহীত নমুনার সংখ্যা দাঁড়ায় ২৫৭টি।’

২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢামেক হাসপাতালে স্থাপিত অস্থায়ী বুথের মাধ্যমে লাশের দাবিদারদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ শুরু হয়। সর্বশেষ ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩৮ জন নিকট আত্মীয়ের কাছ থেকে ৩৮টি রেফারেন্স নমুনা সংগ্রহ করা হয়। অশনাক্তদের পরিচয় নিশ্চিত হতে সিআইডির ফরেনসিক টিম ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছে। সিআইডির ডিএনএ ল্যাব টিম সর্বোচ্চ দ্রুততার সঙ্গে ডিএনএ পরীক্ষা করে অশনাক্তদের পরিচয় শনাক্তের কাজ শেষ করবে।

প্রসঙ্গত, ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে ৬৭ জন নিহত ও অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। আহতদের মধ্যে ৯ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

জেইউ/এনডিএস/এমকেএইচ