পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা সঙ্কট বড় জটিল। এর কোনো একরতফা সমাধান নেই। এ সমস্যা সমাধানে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তবে এ সমস্যা সমাধানে ইতোমধ্যেই কিছু ইতিবাচক উন্নতি হয়েছে। আশার কথা হচ্ছে, এ ইস্যুতে রাশিয়া এবং গণচীন তার আগের অবস্থান থেকে অনেকটা সরে এসেছে।’
Advertisement
রোববার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ও এটিএনবাংলা আয়োজিত ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্টে বিতর্ক প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ডফাইনালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. মোমেন বলেন, ‘এ সমস্যা সমাধানে দ্বি-পাক্ষিক আলোচনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করতে হবে। বৃহত্তর স্বার্থে এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা রক্ষায় যে অভ্যন্তরীণ কৌশল ডিজাইন করা হয়েছে তাতে করে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধানের পথে এগিয়ে যাচ্ছি।’
আরও পড়ুন- রোহিঙ্গাদের জন্য ধ্বংস হচ্ছে বনাঞ্চল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
Advertisement
তিনি বলেন, ‘এ সমস্যা অনেকদিন ধরে চললে এ অঞ্চলে কিছু অনিশ্চয়তা দেখা দিবে এবং কোনো রাষ্ট্রের জন্যই মঙ্গলজনক হবে না। চীন ও ভারতকে বুঝাতে হবে রোহিঙ্গা সঙ্কট যদি দীর্ঘদিন বজায় থাকে তাহলে তা তাদের জন্যও ভবিষ্যতে সঙ্কট তৈরি করতে পারে।’
আব্দুল মোমেন আরও বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন জাতিসংঘে কোনো সঙ্কট উত্থাপন করলেই তার সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭৮ সালে গঙ্গার পানি বণ্টন নিয়ে আমরা জাতিসংঘে গেলেও ভারত তখন জাতিসংঘের কোনো চাপ ভ্রুক্ষেপ করেনি। ঠিক একইভাবে ইরান-ইরাক এবং সিরিয়া সঙ্কটও কিন্তু জাতিসংঘ সুরাহা করতে পারেনি। শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে আমরা রোহিঙ্গা সঙ্কটের সুন্দর সমাধানে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক উভয়ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আমরা শাখের করাতের মধ্যে আছি। মিয়ানমার মাঝে মাঝে বিভিন্ন উস্কানি দিলেও আমাদের কথা শোনে। যেমন-তাদের ওয়েবসাইটে আমাদের সেন্টমার্টিন তাদের বলে দাবি করার পর আমরা প্রতিবাদ করলে তা আবার সরিয়ে নেয়।’
Advertisement
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারকে আমরা একটি সেফ জোন তৈরি করার জন্য রাজি করানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। গ্র্যান্ড ফাইনালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজিকে পরাজিত করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি চ্যাম্পিয়ন হয়।
গ্র্যান্ড ফাইনাল প্রতিযোগিতা শেষে ট্রফি ক্রেস্টসহ চ্যাম্পিয়ন দল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিকে নগদ দুই লাখ টাকা, রানার আপ দল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজিকে এক লাখ টাকা এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি দলকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পুরস্কার হিসেবে দেয়া হয়।
ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট-২০১৮ প্রতিযোগিতায় সরকারি বেসরকারি মোট ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নেয়।
জেপি/এনডিএস/পিআর