জাতীয়

রোহিঙ্গাদের জন্য ধ্বংস হচ্ছে বনাঞ্চল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের জায়গা দিতে গিয়ে বাংলাদেশের বনাঞ্চল ধ্বংস ও প্রকৃতির ক্ষতি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তাছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হলেও বাংলাদেশ আশানুরূপ বৈদেশিক সহায়তা পাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।

Advertisement

রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে এবং জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইন্টার্নেশনাল অর্গানাজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) ও প্ল্যাটফর্ম অন ডিজাস্টার ডিসপ্লেসমেন্টের (পিডিডি) সহায়তায় ‘অ্যানুয়াল থিমেটিক মিটিং অফ দা প্ল্যাটফর্ম অন ডিজাস্টার ডিসপ্লেসমেন্ট’ শীর্ষক সেমিনারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ ছাড়াও জার্মানি, ফিজি, কোস্টারিকা, ফ্রান্স, মেক্সিকো এবং সুইজারল্যান্ডসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত বিভিন্ন দেশের প্রায় ১৩০ জন প্রতিনিধি এ সেমিনারে অংশ নিচ্ছেন।

ড. আব্দুল মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের মতো শরণার্থী সঙ্কট মোকাবেলায় বাংলাদেশ বিশ্ববাসীর কাছে এক রোল মডেল। তবে এই রোহিঙ্গাদের জন্যই আমাদের বনাঞ্চল ধ্বংস হচ্ছে। পরিবেশ ও প্রকৃতির ওপর পড়ছে বিরূপ প্রভাব।

Advertisement

তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ অনেক বেশি দক্ষতা অর্জন করেছে। আর এ ধরনের সঙ্কট আমাদেরকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা যদি এক মিটার বেড়ে যায়। তাহলে বাংলাদেশের ২০ শতাংশ জমি তলিয়ে যাবে। এ ধরনের ঝুঁকির মধ্যে থেকেও আমরা সেভাবে বৈদেশিক অর্থ সহায়তা পাচ্ছি না।

তিনি বলেন, যখন এই পরিস্থিতি আমাদের সামনে আসবে তখন বাংলাদেশের উৎপাদন ক্ষমতা ১৪ শতাংশে নেমে আসবে। বাংলাদেশের মতো এমন আক্রান্ত দেশগুলোর জন্য প্রতিবছর ১০০ থেকে ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা দেয়ার কথা কিন্তু আমরা সেগুলো কিছুই পাচ্ছি না শুধু কথাবার্তাই হচ্ছে। তাই পাবলিক অ্যাওয়ারনেস, গ্লোবাল অ্যাওয়ারনেস তৈরি করতে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরা এ সেমিনারের আয়োজন করেছি।

অনুষ্ঠান শেষে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের কবে নাগাদ ভাসানচরে স্থানান্তরিত করা হবে তার সময়সূচি এখনও নির্ধারণ করা যায়নি।

Advertisement

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুল রহমান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমরা বেশ ভালোভাবেই মোকাবেলা করতে পারছি। তবে রোহিঙ্গা সঙ্কটের মতো মানবসৃষ্ট দুর্যোগ আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। অন্যান্য বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোরকে সঙ্গে নিয়ে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’র ডেপুটি এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি সরমাদ, আইওএম’র পরিচালক (গ্লোবাল কমপ্যাক্ট ফর মাইগ্রেশন) মাইকেল ক্লেইন সলোমন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি ইনিক বোরদিন, বাংলাদেশ জার্মানির ডেপুটি হেড অফ মিশন মাইকেল স্কালথেসিস এবং বাংলাদেশের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামাল।

জেপি/এমবিআর/পিআর