বাংলাদেশের ফুটবল এখনো অনেক পিছিয়ে। তবুও ফুটবল নিয়ে আমাদের উন্মাদনার কমতি নেই। বিশ্ব ফুটবলে এগিয়ে যেতে দেশের খেলোয়াড়দের ঘাম ঝরানো চেষ্টা তো রয়েছেই। দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরেও চলছে প্রশিক্ষণ। বরিশাল বিভাগের তরুণ ফুটবলারদের স্বপ্ন নিয়ে লিখেছেন মহিউদ্দিন অপু—
Advertisement
‘বাংলাদেশ ফুটবলে মেসির মতো খেলার স্বপ্ন দেখি। জানি গুণগত মানের একজন ফুটবলার হতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। তাই ফুটবল নিয়ে নিয়মিত কঠোর অনুশীলন করি। উন্নত প্রশিক্ষণের সুযোগ পেলে হয়তো আমাদের দেশেও মেসির মতো অনেক মেসি থাকতো। তবুও বিশ্বাস রাখি, একদিন বিশ্বকাপ ফুটবল হবে আমাদের।’ কথাগুলো বলছিল মো. সজিব।
সজিব বরগুনা জেলা সরকারি শিশু পরিবারের সদস্য ও জেলা ফুটবল দলের একজন খেলোয়াড়। নিজেকে গুণগত মানের একজন ফুটবলার হিসেবে গড়ে তুলতে গত তিন বছর যাবত কঠোর অধ্যবসায় করে চলেছে সজিব। প্রাথমিকে পড়ার সময় জেলার কড়ইতলা গ্রামের স্কুল মাঠ থেকে ফুটবলার হওয়ার প্রথম স্বপ্ন দেখে সজিব। মাধ্যমিকে উঠতেই ফুটবলের প্রতি আগ্রহটা বাড়তেই থাকে। তাই মাধ্যমিক শেষ না হতেই সজিবের সুযোগ মেলে জেলা ফুটবল দলে নিয়মিত ফুটবল প্রশিক্ষণের। জেলা দল হয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলার সাথে খেলে বেশ সুনামও কুড়িয়েছে সজিব।
> আরও পড়ুন- অন্য এক সাকিবের গল্প
Advertisement
শুধু সজিবই নয়। বিশ্বখ্যাত ফুটবল তারকা মেসি, নেইমার, রোনালদোর মতো খেলার স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশের মিথুন, সাকিব, সরওয়ার, জাকিরসহ অনেকেই। ১৯ ফেব্রুয়ারি বরগুনা স্টেডিয়াম মাঠে বরিশাল বিভাগের তরুণ ফুটবলাররা তাদের এমন স্বপ্নের কথা জানায়। অনুষ্ঠিতব্য শেখ কামাল অনূর্ধ্ব-২০ জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের প্রশিক্ষণের জন্য ওইদিন বরিশাল বিভাগের মোট ৩০ জনকে বাছাই করা হয়।
বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিডিএফএ) আয়োজনে অনুষ্ঠিতব্য প্রস্তাবিত শেখ কামাল অ-২০ জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের বরিশাল বিভাগের খেলোয়াড় বাছাইয়ের কার্যক্রম প্রক্রিয়ার উদ্বোধন ও খেলোয়াড়দের ইয়েস কার্ড প্রদান করেন বিডিডিএফএ মহাসচিব তরফদার মো. রুহুল আমিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বরগুনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ও বিভাগীয় সংগঠক পরিষদের মহাসচিব আশিকুর রহমান মিকু, চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সিরাজউদ্দিন মো. আলমগীর, ময়মনসিংহ বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ান প্রমুখ।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ইয়েস কার্ডধারী খেলোয়াড় মিথুন, সাবিক, সরওয়ার ও জাকির বলেন, ‘এ ধরনের প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে তৃণমূলের খেলোয়াড়রা তাদের যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ পাবে। এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
> আরও পড়ুন- এগিয়ে থাকুন সৃজনশীলতায় বরগুনা জেলা ফুটবল দলের প্রশিক্ষক বজলুর রহমান বলেন, ‘বাফুফের উচিত সরাসরি এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা। তৃণমূলের অনেক প্রতিভা রয়েছে; যারা সুযোগ ও প্রশিক্ষণ পেয়ে জাতীয় পর্যায়ে ভূমিকা রাখতে পারবে।’
Advertisement
বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসেসিয়েশনের সমন্বয়কারী আহমেদ সাইদ আল ফাতাহ বলেন, ‘গত বছর নভেম্বরে শুরু হয় বাছাই কার্যক্রম। মূলত জাতীয় দলকে সহযোগিতা করা এই বাছাইয়ের উদ্দেশ্য। এরপর আগামী এপ্রিলে হবে টুর্নামেন্ট। এ টুর্নামেন্টের সেরা ৫০ জন ফুটবলারকে হাই পারফরম্যান্স ট্রেনিংয়ের আওতায় আনা হবে। প্রতিটি ম্যাচই সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।’
বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব তরফদার মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘আজ খুশির দিন। কারণ আটটি বিভাগেই আমরা বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পেরেছি। পুরো বাংলাদেশ যুক্ত হয়েছে এ বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে। আমাদের ঘুমিয়ে পড়া ফুটবলকে আবার জাগিয়ে তুলতে হবে। এ জন্য তৃণমূল ফুটবলের উন্নয়নে কাজ করতে হবে। ফুটবলের উন্নয়নে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’
এসইউ/আরআইপি