দেশজুড়ে

রোহিঙ্গা শিবিরে দুর্বৃত্তের গুলি, আহত ২

 

কক্সবাজারের টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে এক পল্লী চিকিৎসকসহ দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত নয়টার দিকে নয়াপাড়া শিবিরের শালবাগান ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে। ক্যাম্পে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আইন-শৃংখলা রক্ষায় যৌথ বাহিনী টহল জোরদার করেছে। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

Advertisement

গুলিবিদ্ধ ডা. হামিদ (৪১) টেকনাফ নয়াপাড়া ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে ও ক্যাম্প এলাকার একজন পল্লী চিকিৎসক এবং অপর গুলিবিদ্ধ হাসান আলী মোচনী নিবন্ধিত ক্যাম্পের সি- ব্লকের মোহাম্মদ সালামের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নয়াপাড়া শালবন ক্যাম্প (নং- ২৬) এ সন্ধ্যার পর ১৫-২০ জনের একদল সশস্ত্র গ্রুপ এসে নিজা ফার্মেসিতে কাজ করা অবস্থায় ডা. হামিদকে অপহরণ করে পাহাড়ের দিকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর সেখানে ৬-৭ রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়। পরে শালবন ক্যাম্পের পশ্চিমে এ-ব্লকের পাশে ডা. হামিদের গুলিবিদ্ধ দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

আবার নয়াপাড়া নিবন্ধিত শরণার্থী ক্যাম্পে একদল সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী সি ব্লকের হাসান আলী প্রকাশ কমিটি হাসানকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে গুলি করে। এতে হাসান আলীর শরীরে ২টি বুলেট বিদ্ধ হয় বলে জানা যায়।

Advertisement

স্থানীয় রোহিঙ্গা ও ক্যাম্পে নিয়োজিত আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মুমূর্ষ হাসান ও হামিদকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে আসলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নয়াপাড়া শরণার্থী ক্যাম্প পুলিশ পরিদর্শক আব্দুস সালাম জানান, গুলিবিদ্ধদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং যৌথ বাহিনী টহল জোরদার করেছে।

ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা জানান, শুক্রবার সকালে র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে রোহিঙ্গা শীর্ষ ডাকাত নুরুল আলম প্রকাশ মাস্টার জুবাইর নিহত হওয়ার পর তার সহযোগীরা প্রতিশোধের ঘোষণা দিয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে ওই ঘটনায় আইন-শৃংখলা বাহিনীকে সহযোগিতা করেছে এমন সন্দেহভাজনদের ওপর হামলা চালাচ্ছে নুরুল আলম প্রকাশ মাস্টার জুবাইর গ্রুপ। কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘সন্ধ্যার পর গোলাগুলির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে পাহাড়ী এলাকা থেকে দু’জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ সময় হামিদ মারা গেছে বলে ধারণা করেছিল চিকিৎসকরা। পরে দু’জন জীবিত কিন্তু মুমূর্ষু হওয়ায় মধ্যরাতে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

রাত সোয়া দেড়টার দিকে তাদের বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স চমেক হাসপাতালের পথে রয়েছে বলে মুঠোফোনে জানান হাসানের স্বজন জসিম। এদিকে, এ ঘটনা প্রকাশ পাবার পর ক্যাম্প ও আশপাশ এলাকায় আতংক বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

Advertisement

সায়ীদ আলমগীর, কক্সবাজার

এমআরএম