বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগম ২০১৫ সালে ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে সিরিয়া যান। সম্প্রতি তিনি সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবির থেকে যুক্তরাজ্যে ফেরার আকুতি জানালে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার নাগরিকত্ব বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু শামীমার মা-বাবা বাংলাদেশি হলেও তিনি বাংলাদেশের নাগরিক নন। আর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এমন তথ্য জানানোর পর বিপদে পড়েছে যুক্তরাজ্য।
Advertisement
শামীমার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার আইনগত ভিত্তি নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে। ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ এর আগে বলেন, ‘আমার বক্তব্য পরিষ্কার। বিদেশি সন্ত্রাসী সংস্থার হয়ে কাজ করা কাউকে সমর্থন করা যায় না। তার দেশে প্রত্যাবর্তন যাতে না হয় তার জন্য আমি আমার সব চেষ্টা করবো।’
আরও পড়ুন>> আইএসের অন্তঃসত্ত্বা ব্রিটিশ-বাংলাদেশিকে নেবে না যুক্তরাজ্য
গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রকাশের তা নজরে আসে বাংলাদেশ সরকারের। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, শামীমাকে ভুলভাবে বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করায় বাংলাদেশ সরকার গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
Advertisement
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, ‘শামীমা বাংলাদেশের নাগরিক নন। তিনি জন্মগতভাবে যুক্তরাজ্যের নাগরিক। কখনো বাংলাদেশের নাগরিকত্বের জন্য আবেদনও করেননি তিনি। ফলে, বাংলাদেশে তাকে ফিরতে দেওয়ার প্রসঙ্গও উঠতে পারে না।’
আরও পড়ুন>> সেই শামীমার সন্তান প্রসব, সন্তানের নাগরিকত্বের কী হবে
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে শামীমাকে নিয়ে এমন বিবৃতি দেয়ার বিপদে পড়েছে যুক্তরাজ্য। কেননা ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী, দেশটির কোনো নাগরিককে রাষ্ট্রহীন করার সুযোগ নেই। তারা শামীমাকে বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিক অভিহিত করে তার নাগরিকত্ব বাতিলের যে প্রক্রিয়া শুরু করেছিল তা এখন আইনত সম্ভব নয়।
সিরিয়ার শরণার্থী শিবির থেকে যুক্তরাজ্যে ফেরার আকুতি জানানোর সময় শামীমা বেগম অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি তিনি একটি ছেলে শিশুর জন্ম দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের আইনজীবী। শামীমার এটি তৃতীয় সন্তান। আগেও দুটি সন্তান জন্ম দেন তিনি। তবে দুটি সন্তানই অপুষ্টিতে ভুগে ও বিনা চিকিৎসায় মারা যায়।
Advertisement
আরও পড়ুন>> নাগরিকত্ব হারাচ্ছেন আইএসে যোগ দেয়া ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শামিমা
লন্ডনের বেথনাল গ্রিন একাডেমির ছাত্রী শামীমা বেগম মাত্র ১৫ বছর বয়সে তার আরও দুই বান্ধবীসহ তুরস্ক সীমান্ত হয়ে সিরিয়ার আইএস ঘাঁটিতে যান। সেখানে যাওয়ার পর নেদারল্যান্ডস থেকে আসা এক আইএস যোদ্ধাকে বিয়ে করেন।
কিন্তু তার স্বামী সম্প্রতি সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর হাতে ধরা পরার পর একা হয়ে যান শামীমা। এরপরই তিনি যুক্তরাজ্যে ফেরার কথা বলেন। ১৯ বছর বয়সী শামীমা বেগম এখন সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছেন।
এসএ/পিআর