দেশজুড়ে

প্রথম শহীদ মিনার পুনর্নির্মাণে গতি পাচ্ছে

ইতিহাসের অংশ হয়ে ওঠা ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহীদ মিনার পুনর্নির্মাণ কাজে গতি আসছে। খুব শিগগিরই এর নির্মাণকাজে হাত দিতে যাচ্ছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। রাজশাহী কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাস চত্বরে প্রথম শহিদ মিনারের স্থানেই এটি পুনর্নির্মাণের কথা রয়েছে।

Advertisement

রাসিক জানিয়েছে, ৫২ ফিট উচ্চতার নতুন মিনার নির্মাণ করার কথা ছিল বছর তিনেক আগে। নির্মাণে ৫০ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ দিয়েছিলেন রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা।

২০১৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমানের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বরাদ্দের চিঠি তুলেও দেন এমপি। কিন্তু আইনি জটিলতায় অর্থ বরাদ্দ মেলেনি। ফলে নির্মাণকাজ শুরু করতে পারেনি রাসিক।

তাছাড়া যে জায়গায় শহীদ মিনার নির্মাণের কথা ছিল সেখানে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। ফলে একটু দূরে নির্মাণ হচ্ছে। তাছাড়া এই অবকাঠামো নির্মাণে আরও এক কোটি টাকা প্রয়োজন। বরাদ্দ পেলে দ্রুত নির্মাণকাজ শুরু করবে রাসিক।

Advertisement

ফেব্রুয়ারি এলেই প্রথম শহীদ মিনারের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি ওঠে। এবার সেই দাবি জোরাল হয়েছে। এই দাবিতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে অনলাইন ভোটিং কার্যক্রম শুরু করেছে রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটি। দালিলিক প্রমাণসহ গৃহিত মতামত পিটিশন আকারে পৌঁছে যাবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে। দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে barendraexpress.com.bd/firstshahidminar এই লিংকে গিয়ে যে কেউ মতামত দিতে পারেন।

তরুণদের এই কার্যক্রম সমর্থন জানিয়েছেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক এসএম আবদুল কাদের। তিনি বলেন, জেলার প্রত্যেক ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে অনলাইন ভোটিং কার্যক্রম চালু করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া এই কার্যক্রমে সার্বিক সহায়তা দিতে প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রথম শহীদ মিনারের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, নগরীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ পরিকল্পনা নিয়েছে সিটি করপোরেশন। তাছাড়া প্রথম শহীদ মিনার পুনর্নির্মাণেও আলাদা প্রকল্প বাস্তবায়নের অপেক্ষায়। এই প্রকল্প দুটি এক করা গেলে এটি অন্য মাত্রা পাবে। তখন এর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায় সহজ হয়ে যাবে। এ নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য, সিটি মেয়র ও কলেজ কর্তৃপক্ষকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক।

একই মত রাসিকের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হকেরও। তিনি যোগ করেন-প্রথম শহীদ মিনারকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হিসেবে প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায়ে রাজশাহীর সব শ্রেণি-পেশার মানুষের ঐক্যমত জরুরি। দ্রুত এ নিয়ে আলোচনা শুরুর আহ্বান জানান তিনি।

Advertisement

এ বিষয়ে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমান বলেন, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসের প্রধান ফটকের পাশে দেশের প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছিল। পরে সেটি তৎকালীন পুলিশ বাহিনী গুঁড়িয়ে দেয়।

এটিই বাংলাদেশের প্রথম শহীদ মিনার যা ঐতিহাসিকভাবে সত্য। তবুও আজও স্বীকৃতি পায়নি এ শহীদ মিনার। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হিসেবে প্রতিষ্ঠা এবং এর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায়ে সব পক্ষের সঙ্গে তিনিও আলাপ করবেন বলে জানান অধ্যক্ষ।

ঢেরদৌস সিদ্দিকী/এমএএস/পিআর