একুশে বইমেলা

প্রকাশনা শিল্পে পেশাদারিত্ব প্রয়োজন : কামরুল হাসান শায়ক

পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্সের প্রতিষ্ঠাতা কর্ণধার কামরুল হাসান শায়ক। অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জানালেন প্রকাশনা শিল্পের নানা দিক সম্পর্কে। জাগো নিউজের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে কথা বলেছেন সালাহ উদ্দিন মাহমুদ—

Advertisement

জাগো নিউজ: এবারের বইমেলার সার্বিক পরিবেশ বা নিরাপত্তা সম্পর্কে কিছু বলুন—

কামরুল হাসান শায়ক: বইমেলার সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি এবার খুবই জোরালো হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব দিক খুলে দেওয়ার ব্যাপারে সভা হয়েছিল। নানাবিধ সুবিধা-অসুবিধার কথা বিশ্লেষণ করে নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে পূর্ব দিকটা বন্ধ রাখা হয়েছে। হয়তো আগামী বছর খুলে দেওয়া হতে পারে। এছাড়া নিরাপত্তা বজায় রাখতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। জাগো নিউজ: এবারের বইমেলার কোন নতুনত্ব আপনার চোখে পড়েছে কি?

কামরুল হাসান শায়ক: অবশ্যই চোখে পড়ার মতো নতুনত্ব আছে এবার। মেলায় ভাষা শহিদদের স্মরণে চারটি চত্বর করা হয়েছে। এছাড়া বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত নানা আবহ নজর কেড়েছে সবার। আমাদের বর্তমান প্রজন্ম বায়ান্নো থেকে একাত্তরের আন্দোলন সম্পর্কে জানতে পারবে।

Advertisement

> আরও পড়ুন- বাংলা একাডেমি চত্বরে নিঃসঙ্গ নজরুল 

জাগো নিউজ: বলা যায়, বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব এই বইমেলা। আপনি কী মনে করেন?

কামরুল হাসান শায়ক: অবশ্যই অমর একুশে বইমেলা বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব। পৃথিবীর আর কোন দেশে একমাসব্যাপী বইমেলা অনুষ্ঠিত হয় বলে আমার জানা নেই। এই বইমেলা সবাইকে একটি সাংস্কৃতিক আবহের মধ্যদিয়ে আপ্লুত করে। বইমেলার মধ্যদিয়েই আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী পালন করতে উদ্যোগী হতে পারবো। এছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করার অনুপ্রেরণা পাবো বলে আশা করি।

জাগো নিউজ: লেখক ও প্রকাশকদের মধ্যে বোঝাপড়াটা কেমন হওয়া উচিত?

Advertisement

কামরুল হাসান শায়ক: প্রকাশনা শিল্প বেঁচে থাকবে লেখক-পাঠক-প্রকাশকের বোঝাপড়ার মাধ্যমে। এর জন্য সবার ভেতরেই পেশাদারিত্ব প্রয়োজন। লেখক কেন, কী লিখবেন—প্রকাশক কী প্রকাশ করবেন, তা পারস্পারিক বোঝাপড়ার মাধ্যমেই নির্ধারিত হবে।

জাগো নিউজ: বইয়ের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে আছে কি?

কামরুল হাসান শায়ক: কাগজের দাম কিছুটা বাড়লেও আমরা বইয়ের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রাখতে পেরেছি। আমার মনে হয় না, আমাদের বইয়ের মূল্যের ব্যাপারে পাঠকের কোন আক্ষেপ থাকতে পারে।

> আরও পড়ুন- ‘লেখক বলছি’ পাঠক-লেখকের সংযোগ সেতু 

জাগো নিউজ: মানসম্মত বই প্রকাশ করার ক্ষেত্রে প্রকাশকদের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত?

কামরুল হাসান শায়ক: মানহীন বই হচ্ছে। তা অস্বীকার করছি না। এটা হতেই পারে। সব দেশেই হচ্ছে। বাজারের কথা চিন্তা করেই প্রকাশকদের এগোতে হয়। তবে আমরা মানসম্মত বই প্রকাশের দিকেই বেশি নজর দেই। সেটা হয়তো আমাদের বিগত বছরের প্রকাশনার দিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন।

জাগো নিউজ: লেখকের টাকায় বই প্রকাশ করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে আপানার অভিমত কী?

কামরুল হাসান শায়ক: লেখকের টাকায় বই হতে পারে—একথা সত্য। এক্ষেত্রে লেখকের দায়বদ্ধতাই বেশি। আমার মতে, প্রথমত চুক্তি ছাড়া কোন প্রকাশককে পাণ্ডুলিপি দেবেন না লেখক। কারণ লেখক-প্রকাশকের সমন্বিত প্রয়াসেই একটি বই আলোর মুখ দেখবে। তা না হলে সৃষ্টির আনন্দ ম্লান হয়ে যাবে। সব লেখকের বইয়ের পাঠক চাহিদা যেহেতু একরকম নয়; সেক্ষেত্রে প্রকাশক খুব বড় ঝুঁকি নিতে চাইবেন না।

এসইউ/এমকেএইচ