২০১৮-১৯ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ পাওয়া ১ হাজার ৪৫১টি প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়ন চায় সরকার। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় মনে করছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের অন্যতম বাধা ঋণদাতাদের সঙ্গে মিল না হওয়া। এ ছাড়াও প্রকল্প পরিচালকদের প্রকল্প স্থানে না থাকা ও ভূমি অধিগ্রহণে জটিলতাকে দায়ী করছে মন্ত্রণালয়।
Advertisement
আজ (রোববার) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব সমস্যার কথা জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
আজকের বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল- গত ৭ মাসে এডিপির বাস্তবায়ন অগ্রগ্রতি পর্যালোচনা করা। তাতে দেখা যায়, অর্ধেকের বেশি সময় পার করার পর প্রকল্পের অগ্রগতির হার ৩৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত অর্থবছরে এই হার ছিল ৩৩.৩৫ শতাংশ।
এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, গতি অর্জন করাই প্রধান লক্ষ্য। সব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছে দাবি এটাই ছিল। এ ক্ষেত্রে পরামর্শ থাকলে তা করতে রাজি আছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।
Advertisement
ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে অমিলের বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে বিদেশি ঋণ গ্রহণ করি, সেক্ষেত্রে আমরা আমাদের প্রক্রিয়া অনুসরণ করি। আমরা চাই, তাড়াতাড়ি কাজ করতে। যারা আমাদের ঋণ দিচ্ছে, তাদেরও আইন আছে। তাদের আইনকে আমি সম্মান করি। ওইটা তাদের অনুসরণ করতে হয়। ফলে দুইটার মধ্যে মিসম্যাচ (অমিল) হয়। ফলে আমরা…।’
‘আপনারা আমাদেরকে চেনেন, আমাদেরকে দোষ দেন। কিন্তু ওর (দাতা) সঙ্গে সমঝোতা করতে গিয়ে দেরি হয়ে যায় অনেক সময়। প্রচ্ছন্ন কিছু বিষয়, যেগুলো আপনারা দেখেন না, অন্যদিকে যারা খেলে, আমাদের ঋণদাতারা, তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে কিছু মিসম্যাচ হয়। আর দায়টা আমাদের ওপর আসে,’ যোগ করেন এম এ মান্নান।
এই বিষয়টা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিতেও আনা হবে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এটা আমরা একা ঠিক করতে পারব না। এ জন্য ইআরডিকে অনুরোধ করেছি, এটা কীভাবে আরও কমিয়ে আনা যায়। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গেও আলোচনা করব, কীভাবে এটা সমাধান করা যায়।’
বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালকদের প্রকল্প স্থানে থাকতে হবে বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
Advertisement
এম এ মান্নান বলেন, ‘একজনকে একাধিক প্রকল্পের পরিচালক করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে, একাধিক প্রকল্পের দায়িত্ব না দেয়ার জন্য। আগের তুলনায় কমে গেছে। তবে লক্ষ্য করেছি, কিছু কিছু আছে। যদি সঙ্গত কোনো কারণ থাকে, তাহলে যার অর্ডার, তার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে এটার ব্যত্যয় ঘটানো যেতে পারে।’
প্রকল্প পরিচালকদের প্রকল্প স্থানে না থাকাকে ভয়ঙ্কর উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘কিছু প্রকল্প আছে মাঠে থাকতে হয় না। বদ্ধ ঘরে থেকে করতে পারব। প্রকল্প ঢাকায় হলে ঢাকায় থাকতে হবে, চট্টগ্রামে হলে চট্টগ্রামেই থাকতে হবে। মূল কথা হলো, প্রকল্পের পরিচালকরা প্রকল্পকে ওন (ধারণ) করে প্রকল্পকে কাছে রাখবে। এটা প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন। আমি লক্ষ্য করেছি, সেটা মানা হয় না প্রায় ক্ষেত্রেই।’
প্রকল্প পরিচালকদের প্রকল্পের স্থানে না থাকার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরেও আনা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হওয়ার অন্যতম কারণ ভূমি অধিগ্রহণ বলেও মনে করেন এম এ মান্নান। এ জন্য ভূমি সচিবকে নির্দেশনা দেন জনবল নিয়োগসহ কীভাবে বিষয়টার সমাধান করা যাবে, তা খুঁজে দেখার জন্য।
প্রকল্পের গতি বাড়াতে এই ধরনের সভা প্রতি তিনমাস পরপর হবে বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
পিডি/এনএফ/এমএস