সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ৭ বছর বয়সী সোনালীর ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অর্থাভাবে সঠিক চিকিৎসা না করাতে পেরে শিশু বয়সেই সব স্বপ্ন শেষ হতে বসেছে তার। সোনালীর সোনালী দিন ফিরে পেতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন তার স্বজনরা।
Advertisement
জানা যায়, ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নের মছলন্দপুর বিশ্বাস পাড়ার বাসিন্দা দরিদ্র আছাদ আলীর দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে সোনালী। তার বাবা পেশায় হকার। সে কামারখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
গত পবিত্র ঈদুল আজহার দুই দিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয় ৭ বছর বয়সী সোনালী। দুর্ঘটনায় তার ডান পা ক্ষত হয়। ওই সময় সোনালীকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নেয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে একটু সুস্থ হলে পরবর্তীতে সোনালীকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুদিন পর সোনালীর পায়ের ক্ষতস্থান পুনরায় ফুলে যায়। অর্থাভাবে তার বাবা আর সোনালীকে চিকিৎসার জন্য ফরিদপুরে আনতে পারেনি। তবে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে সোনালীর চিকিৎসা করান। কিন্তু আস্তে আস্তে সোনালী সুস্থ না হয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। দরিদ্র বাবা সঠিক চিকিৎসা করাতে না পারায় সোনালীর পায়ের ক্ষতস্থান ফুলে যায় এবং একপর্যায়ে তার চলাফেরা বন্ধ হয়ে যায়।
শনিবার সকালে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম সোনালীর বর্তমান অবস্থার কথা জানতে পেরে তার ছবি দিয়ে ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন। ফেসবুকের ওই স্ট্যাটাসটি ব্যাপক সাড়া ফেলে। স্ট্যাটাসটি জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়ার নজরে আসে। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সোনালীর স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন।
Advertisement
দুপুরে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সহযোগিতায় প্রথমে ফরিদপুর সদর হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে সোনালীকে। পরে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে তাকে ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করা হয়। সোনালী বর্তমানে ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন।
ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, আমার গ্রামের বাড়ি মধুখালীতে। ওই এলাকার এক ছোট ভাই বিষয়টি মোবাইলে আমাকে জানালে আমি সোনালীর খারাপ অবস্থার কথা ভেবে জেলা প্রশাসক স্যারের সহায়তা কামনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেই। পরে জেলা প্রশাসক স্যার সোনালীকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা নেন।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, সোনালীর পায়ের ক্ষত স্থান ফুলে গেছে এবং সেখানে পচন ধরেছে। চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তারা আরও জানান, আগামীকাল (রোববার) অর্থপেডিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. অনাদী রঞ্জন মন্ডল এসে দেখবেন। তিনিই ব্যবস্থা নিবেন।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া জাগো নিউজকে বলেন, অসহায়দের পাশে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন সব সময় আছে। অর্থাভাবে একটি শিশুর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে এটা মেনে নেয়া যায় না। তাই সোনালীর দুরবস্থার কথা জেনে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেছি। সোনালীর উন্নত চিকিৎসার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Advertisement
বি কে সিকদার সজল/এমএএস/এমকেএইচ