বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগম ২০১৫ সালে ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে সিরিয়া যান। সেই সময় তার বয়স ছিল ১৫ বছর। চার বছরের আইএস জীবন কাটানোর পর অন্তঃসত্ত্বা শামীমা এখন সন্তানের জন্ম দিতে যুক্তরাজ্যে ফিরতে চান। কিন্তু দেশটি তার যুক্তরাজ্যে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
Advertisement
সম্প্রতি সিরিয়ার এক শরণার্থী শিবির থেকে দ্য টাইমসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে শামীমা বেগম তার অনাগত সন্তানকে জন্ম দিতে যুক্তরাজ্যে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন। তবে তিনি জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসে যোগ দেয়ায় অনুতপ্ত নন। এদিকে তার দেশে প্রত্যাবর্তন ঠেকানোর ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ।
দ্য টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সাজিদ জাভেদ বলেন, ‘আমার বক্তব্য পরিষ্কার। বিদেশি সন্ত্রাসী সংস্থাকে সমর্থনকারী কাউকে সমর্থন করা যায় না। তার দেশে প্রত্যাবর্তন যাতে না হয় তার জন্য আমি আমার সব চেষ্টা করবো। আর শামীমা কোনো কারণে ফিরে আসেন, তবে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে যিনি আইএসে যোগ দিতে ব্রিটেন ত্যাগ করেছিলেন, তিনি আমাদের দেশকে পুরোপুরি ঘৃণা করেন। এখন যদি তিনি ফিরতেই চান, তবে তাকে প্রশ্ন, তদন্ত ও সম্ভাব্য বিচারের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। দেশের জন্য গুরুতর হুমকি এসব নাগরিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে যুক্তরাজ্য।’
Advertisement
নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা সালমা বেগম এখন সিরিয়ার এই শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছেন
যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী বেন ওয়ালেস সালমা বেগমের বিরুদ্ধে স্পষ্ট সতর্কতা জারি করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ব্রিটেনের মানুষের জীবনকে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না। কারণ ওই তরুণী একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত।’
তবে শামীমা বেগম যদি তদন্ত ও নজরদারিতে সম্মত থাকেন তাহলে তাকে দেশে ফিরে আসতে বাধা দেয়ার আইনত কোনো ভিত্তি নেই। কেননা ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী, দেশটির কোনো নাগরিককে রাষ্ট্রহীন করা যাবে না।
কিন্তু জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসে যোগ ও সেখানে এক যোদ্ধাকে বিয়ে করার পর দেশে ফিরলে তিনি আর ব্রিটিশ নাগরিকত্ব দাবি করতে পারবেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়। কেননা সালমা বেগমের বাবা-মা বাংলাদেশের নাগরিক।
Advertisement
জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসে যোগ দিতে ২০১৫ সালে লন্ডনের বেথনাল গ্রিন একাডেমির এই ছাত্রী তার আরও দুই বান্ধবীসহ তুরস্ক সীমান্ত দিয়ে সিরিয়ায় যান। সেখানে গিয়ে তিনি একজন আইএস যোদ্ধাকে বিয়ে করেন। সম্প্রতি সিরিয়ান বাহিনী তার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায়। নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা শামীমা এখন সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছেন।
চার বছরের আইএস জীবন কাটানোর পর নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা শামীমা সিরিয়ার শরণার্থী শিবির থেকে এখন যুক্তরাজ্যে ফিরতে চাচ্ছেন। যেকোনো দিন তার সন্তানের জন্ম হতে পারে। আগেও তার দুটি সন্তান হয়েছিল তবে অপুষ্টি আর রোগে ভুগে দুটি সন্তানেই মারা যায়।
এসএ/এমএস