জাতীয়

সীমিত পরিসরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল চালু

অগ্নিকাণ্ডের পর সীমিত পরিসরে চালু হয়েছে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মামুন মোর্শেদ গণমাধ্যমকে জানান, রাত ১২টার পর থেকেই যেসব রোগী ফিরে আসছেন তাদের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। সকালের মধ্যে সব রোগী হাসপাতালে চলে আসবেন বলে জানান তিনি।

Advertisement

এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১০টায় সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছিলেন, রাতেই চালু হচ্ছে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব জি এম সালেহ উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় শিশু ওয়ার্ডে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় চিকিৎসক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, নার্স, পুলিশ, র‍্যাব সবাই তাৎক্ষণিকভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

তিনি বরেন, যখন অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয় তখন প্রায় ১১০০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আধাঘণ্টার মধ্যেই সকল রোগীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে বাইরে নিরাপদে বের করে আনা সম্ভব হয়।

Advertisement

অগ্নিকাণ্ডে শিশু ওয়ার্ডের ৭০ জন রোগী ভর্তি থাকলেও কেউ হতাহত হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, আইসিইউতে ১০ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এ ঘটনায় হাসপাতালে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

তিনি বলেন, রোগীদেরকে প্রাথমিকভাবে সকল সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। আশেপাশের সকল অ্যাম্বুলেন্স আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছে। তারা সার্বক্ষণিক কাজ করেছেন। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

সাত সদস্যের কমিটি গঠনসোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর, ফায়ার সার্ভিস, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদেরকে তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মুহূর্তে বিদেশে অবস্থান করলেও তার মুখ্য সচিবের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সকল খবরাখবর তিনি নিয়েছেন বলে যোগ করেন তিনি।

Advertisement

এরপর সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, কিছুদিন আগেই আমাদের ফায়ার সার্ভিস হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে কীভাবে উদ্ধার কার্যক্রম চালাবে তার প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। সেটি আজ কাজে লেগেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সকলের প্রতি তাৎক্ষণিক নির্দেশনা দিয়েছি যেকোনো সহযোগিতা প্রদানের জন্য।

অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত নিয়ে দুই ধরনের মন্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি বলেন, যখন আগুন লেগেছে খবর পেয়ে খুব দ্রুতই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কাজ শুরু করেছে। আগুন সবসময় নিচের দিক থেকে উপরের দিকে যায়। তারপরও বিষয়টা তদন্তের আওতায় রয়েছে আমাদের এক্সপার্টরা তদন্ত করছেন। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

তবে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি বলেন, হাসপাতালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খুব ভালো ছিল। অনেকগুলো এক্সিট গেট ছিল যার ফলে রোগীরা খুব দ্রুতই বের হয়ে যেতে পেরেছেন। তারপরও তদন্ত শেষে হাসপাতালে যদি কোনো ত্রুটি থেকে থাকে, সে বিষয়টি চিহ্নিত করা হবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থার সুপারিশ করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদফতের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা আবুল কালাম আজাদ বলেন, রোগীদের সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে প্রথমে আমরা সরকারি হাসপাতালগুলোকে প্রাধান্য দিয়েছি। যে বিভাগের রোগী তাদেরকে সেসব বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রথমে বলেছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে নির্দেশনার অভাবে অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভাররা বেশিরভাগ রোগীকেই ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেছেন। তারপরও আমরা সেখানে চাপ হলে রোগীদেরকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য অনুরোধ করেছি।

জেইউ/বিএ