একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটে অনিয়মের অভিযোগ তুলে নিজ নিজ আসনের ভোট বাতিল এবং পুনরায় নির্বাচনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেছেন সংশ্লিষ্ট আসনের ঐক্যফ্রন্টের পরাজতি ৭৪ প্রার্থী।
Advertisement
গত মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি), বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এবং আজ বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসব মামলা দায়ের করা হয়।
মামলা দায়ের করা প্রার্থীদের মধ্যে বিএনপির ৭০ জন, ঐক্যফ্রন্টের অন্যান্য দলের তিনজন এবং প্রোগ্রেসিভ ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) একজন বয়েছেন।
বিএনপির প্যানেল আইনজীবী এ কে এম এহসানুর রহমান জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
Advertisement
তিনি বলেন, আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৭৪টি আবেদন দায়ের করা হয়েছে। এসব আবেদনের মাধ্যমে নির্বাচনে যে অনিয়ম হয়েছে সে বিষয়ে আমরা আদালতে উপস্থাপন করবো। হাইকোর্টের কার্যতালিকায় (কজলিস্ট) আজ বৃহস্পতিবারের (১৪ ফেব্রুয়ারি) কজলিস্টে ছিল পাঁচটি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল। আমরা কোন কোর্টে শুনানি করতে যাবো- সেটা আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে যাওয়া হবে।
ভোট বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে হাইকোর্টে আবেদনকারীরা হলেন- সুব্রত চৌধুরী ঢাকা-৬, (গণফোরা,) মফিজুল ইসলাম খান কামাল মানিকগঞ্জ-৩, মেজর জেনারেল আ আ সম আমিন (কুড়িগ্রাম-২), আব্দুল মোমেন চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৫), সাইফুল ইসলাম ফিরোজ (ঝিনাইদহ-৪), আবুল কালাম আযাদ সিদ্দিকী (টাঙ্গাইল-৭), জয়নুল আবেদীন (বরিশাল-৩), রুমানা মাহমুদ (সিরাজগঞ্জ-২), জহির উদ্দিন স্বপন (বরিশাল-১), শাহ রিয়াজুল হান্নান (গাজীপুর-৪), নাছের রহমান (মৌলভীবাজার-৩), আব্দুল হাই (মুন্সীগঞ্জ-৩), হাফিজ ইব্রাহিম (ভোলা-২), রুহুল আমিন দুলাল (পিরোজপুর-৩), ডাক্তার দেওয়ান মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন (ঢাকা-১৯), হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (ভোলা-৩), তাজভীর উল আলম (কুড়িগ্রাম-৩), মো. সাইফুল ইসলাম (রংপুর-৬), মো. সাদেক রিয়াজ (দিনাজপুর-২), মোস্তফা মহসীন মন্টু (ঢাকা-৭), নজরুল ইসলাম আযাদ (নারায়ণগঞ্জ-২), মইনুল ইসলাম খান শান্ত (মানিকগঞ্জ-২)।
ইরফান ইবনে আমান অমি (ঢাকা-২), নবী উল্লাহ নবী (ঢাকা-৫), আশরাফ উদ্দিন (নরসিংদী-৫), মো. আমিরুল ইসলাম খান (সিরাজগঞ্জ-৫), শহীদুল ইসলাম (টাঙ্গাইল-১), ফরহাদ হোসেন আযাদ (পঞ্চগড়-২), মো. হাসান রাজিব প্রধান (লালমনিরহাট-১), মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৬), মো. আক্তারুজ্জামান মিয়া (দিনাজপুর-৪), মো. শাহজাহান মিয়া (চাপাইনবাবগঞ্জ-১), মিজানুর রহমান (সুনামগঞ্জ-৫), মো. জি কে গউছ (হবিগঞ্জ-৩), মজিবুর রহমান চৌধুরী (মৌলভীবাজার-৪), ফারুক আলম সরকার (গাইবান্ধা-৫), শফী আহমেদ চৌধুরী (সিলেট-৩), মো. আনোয়ারুল হক (নেত্রকোনা-২), শাহ মো. ওয়ারেস আলী (জামালপুর-৫), নিতায় রায় চৌধুরী (মাগুরা-২), অনিন্দ্য ইসলাম অমিত (যশোর-৩), মো. আবু সুফিয়ান (চট্টগ্রাম-৮), মাসুদ অরুন (মেহেরপুর-১)।
আমিন উর রশীদ (কুমিল্লা-৬), এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন (নোয়াখালী-১), শহীদুল ইসলাম ভুইয়া (খাগড়াছড়ি), সাব্বির আহমেদ (রংপুর-৩), মুন্সী রফিকুল আলম (ফেনী-১) জয়নুল আবদীন ফারুক (নোয়াখালী-২), সাচিং প্রু (বান্দরবান), শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক (চাঁদপুর-৩), আবুল খায়ের ভুইয়া (লক্ষ্মীপুর-২), জাকির হোসেন সরকার (কুষ্টিয়া-৩), রকিবুল ইসলাম (খুলনা-৩), শ্যামা ওবায়েদ ইসলাম (ফরিদপুর-২), আনিছুর রহমান (মাদারীপুর-৩), আাজিজুল বারী হেলাল (খুলনা-৪), শাহ মো. আবু জাফর (ফরিদপুর-১), মো. শরীফুজ্জামান (চুয়াডাঙ্গা-১), হাবিবুল ইসলাম হাবিব (সাতক্ষীরা-১), আলী নেওয়াজ মো. খৈয়ম (রাজবাড়ী-১)।
Advertisement
এছাড়া আরও কয়েকজন পরাজিত প্রার্থী হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় একই অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। তবে তাদের নামের তথ্য পাওয়া যায়নি।
আইনজীবীরা জানান, প্রত্যেক আবেদনকারী নিজ নিজ নির্বাচনী আসনের বিজয়ী প্রার্থীদের বিবাদী করেছেন। আবেদনে বিবাদী বিজয়ী প্রার্থীদের সংসদ সদস্য পদ বাতিল চাওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেক সংসদীয় আসনের নির্বাচনও বাতিল চাওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে সাংগঠনিকভাবে সারাদেশের ৬৪ জেলা থেকে হাইকোর্টের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। দলের স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য মামলা না করার বিষয়ে অবস্থান নিলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তা আমলে নেননি। ওই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়, চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সবগুলো জেলার প্রতিনিধিদের হাইকোর্টে মামলা করার।
শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে জেলা থেকে আগত প্রার্থীদের সঙ্গে স্কাইপিতে মতবিনিময় করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এফএইচ/এমবিআর/এমকেএইচ