একুশে বইমেলা

তরুণরা সাহিত্যের প্রেমে পড়ছে : শামসুজ্জামান খান

বইমেলার আয়োজনের মধ্যদিয়ে মানুষের ভাষা-সাংস্কৃতিক চেতনাবোধ জাগ্রত হচ্ছে। বই পাঠক তৈরি করছে। আর পাঠক লেখক তৈরি করছে। লেখক আর পাঠকের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছে অমর একুশে বইমেলা।

Advertisement

কথাগুলো বলেছেন লেখক, গবেষক এবং বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।

সাহিত্য-সংস্কৃতির এ আয়োজনে নানা বিষয়ই এখন দৃশ্যমান উল্লেখ করে শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘আগে মানুষ মেলায় শুধু ছুটির দিনগুলোতে ভিড় করতো। আর এখন নিয়মিতই ভিড় হচ্ছে। মেলায় আসলে মনে হয় এখন প্রতিদিনই ছুটির দিন।’

তিনি বলেন, ‘তরুণরা সাহিত্যের প্রেমে পড়ছে। তাদের অনেকেই সাহিত্যের সঙ্গে বইয়ের সঙ্গে পরিচিত হয় মেলায় এসে।’

Advertisement

সহজ লেখায় লেখকরা অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন আর পাঠকরাও চাইছেন সহজ পাঠ বলে মন্তব্য করেন এই লেখক। এতে করে সাহিত্যমান কমছে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র গল্প-উপন্যাস নয়, প্রচুর জীবনী গ্রন্থও কিনছেন পাঠকেরা। এসব গ্রন্থ বেরও হচ্ছে বেশ আর লিখছেন প্রখ্যাত লেখকরাই। আশার কথা হচ্ছে, জীবনী বা আত্মজীবনী লেখায় ভাষা-সাংস্কৃতিক চেতনাবোধ জাগ্রত করছে, আগ্রহ বাড়ছে পাঠকদেরও।’

তিনি আরও বলেন, ‘সহজ পাঠে অভ্যস্ত হয়ে পড়লেও তরুণ প্রজন্ম এখন সিরিয়াস পাঠেও মন দিচ্ছেন এবং এটি এখন জোর দিয়ে বলতেই পারি।’

একুশে বইমেলায় বাইরের লেখকদের বই প্রকাশে নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে বাংলা একাডেমির সাবেক এ মহাপরিচালক বলেন, ‘এটি একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত। এই মেলাটি আমাদের আঞ্চলিক মেলা। এখানে ভারতীয় লেখকদের বই যদি প্রকাশ পায়, তবে গোটা মেলা পশ্চিমবঙ্গের লেখকদের বইয়ে ভরে যাবে। সঙ্কুচিত হয়ে পড়বে দেশীয় লেখকদের বই প্রকাশ। পাঠক দেশের রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বই পড়ছে। অথচ ভারতীয় লেখকদের বই প্রকাশ পেলে পাঠক অন্য দিকে ঘুরে যেতে পারে।’

পাঠকরা নতুন লেখকদের বই পাঠে হতাশ কি না- জানতে চাইলে এই গবেষক বলেন, ‘পাঠক এখন নানা ধরনের বইয়ে চোখ রাখছে। আর একজন গুণী লেখক এটি বুঝতে পারার কথা। পাঠককে সুখ দিতে হলে লেখককেও সিরিয়াস হতে হবে।’

Advertisement

প্রকাশনার ত্রুটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি খুবই দুঃখজনক যে প্রকাশকরা কোনো সম্পাদনা পর্ষদ রাখেন না এখানে। অধিকাংশ প্রকাশনীর সম্পাদক নেই। বাইরে থেকে সম্পাদনা করে নিচ্ছে। আর এই কারণেই ত্রুটি থাকছে এবং সাহিত্যমান নিয়ে প্রশ্ন তীব্র হচ্ছে।’

এএসএস/এসআর/এমকেএইচ