দেশজুড়ে

এমন জানলে বিদেশ থেকে দেশে আসতাম না

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই উপজেলার নিজামপুর এলাকায় একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা সদ্য দুবাই থেকে দেশে আসা একটি পরিবারের আনন্দ থামিয়ে দিয়েছে। মুহূর্তে আনন্দ রূপ নেয় বিষাদে।

Advertisement

এ দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসে আগুন ধরে দগ্ধ হয়ে নিহত দম্পতির কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামের আবদুর রহমান (৬৫) ও তার স্ত্রী কুসুমফুল বেগম (৫৫) এবং মাইক্রোবাসের চালক নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার বাঞ্ছা গ্রামের রুবেল (৩৫) নিহত হন।

এ দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাস থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হন আরও চারজন। আহতরা হলেন- আবদুর রহমানের ছেলে আবুল কালাম (৩৫), নাতি আবদুল মালেক (১২), মো. রাশেদ (৯) ও স্বজন মো. হাসান (২০)।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আবদুর রহমান ও তার স্ত্রী কুসুমফুল বেগমকে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিহত দম্পতির প্রবাস ফেরত ছেলে আবদুল মমিন।

Advertisement

মঙ্গলবার রাত ৭টার দিকে নিজ বাড়িতে কান্নায় ভেঙে পড়ে আবদুর রহমানের প্রবাস ফেরত ছেলে আবদুল মমিন বলেন, আমি সোমবার দুবাই থেকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর হয়ে দেশে আসি। এরপর এক আত্মীয়ের বাসায় রাতযাপন করি। চট্টগ্রাম থেকে আমাকে বাড়ি আনার জন্য বাবা আবদুর রহমান, মা কুসুমফুল বেগম, আমার ভাইয়ের ছেলে মালেকসহ ছয়জন একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করে মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যায়।

পথিমধ্যে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার নিজামপুর এলাকায় যাওয়ার পর তাদের মাইক্রোবাসে আগুন ধরে দগ্ধ হয়ে আমার বাবা-মা ও মাইক্রোবাসের চালক নিহত হন। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে ছুটে আসি।

আবদুল মমিন বলেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার জন্যই আমার বাবা-মাকে প্রাণ হারাতে হয়েছে। বেঁচে থেকে আমিও মৃত, আল্লাহ আমাকেও নিয়ে যাক। এমন জানলে বিদেশ থেকে দেশে আসতাম না।

এদিকে, নিহত দম্পতির মরদেহ কমলপুর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছার পর শত শত মানুষ ওই বাড়িতে ভিড় জমান। পরিবারের লোকজন ও স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। এ ঘটনায় কমলপুর গ্রামে শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে।

Advertisement

মো. কামাল উদ্দিন/এএম/জেআইএম