উপমহাদেশের চলচ্চিত্র নিয়ে কথা বলতে গেলে সবার আগে চলে আসে সত্যজিত্ রায়ের নাম। তার নির্মাণগুলো আজও দর্শকদের সেরা পছন্দ; চলচ্চিত্র নিয়ে আগ্রহীদের শিক্ষালয়। আজ থেকে ষাট বছর আগে এই নির্মাতা নির্মাণ করেন তার প্রথম ছবি। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত উপন্যাস ‘পথের পাঁচালি’কে ১৯৫৫ সালের ২৬ আগস্ট সেলুলয়েডে আনেন সত্যজিৎ রায়। প্রথম ছবি দিয়েই তিনি বাজিমাত করেন। সেই বছরই শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় পুরস্কার পান সত্যজিৎ। পরের বছরই কান উৎসবে বেস্ট হিউম্যান ডকুমেন্ট অ্যাওয়ার্ড সম্মানিত হয়।ছয় দশক অতিক্রম করেও জীবন্ত হয়ে আছে কাশ বনের ভিতর দিয়ে অপু-দূর্গার ছুটে যাওয়ার দৃশ্যরা। বাঙালির আঙিনা পেরিয়ে বিদেশ বিভুঁইয়ে এখনও সেই কাশফুল প্রান্তর দিয়ে রেলগাড়ির আওয়াজ শোনা যায়। আর ৬০ বছর ধরে আমরাও অপু-দূর্গার মতো রেললাইনে কান পেতে শুনে আসছি পথের পাঁচালির রসায়ন। বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ছবির মধ্যে অবশ্যই রয়েছে সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র-সিরিজ অপু ত্রয়ী। বার্লিন, কান, নিউইয়র্ক, সান ফ্রান্সিসকোয় বহুবার প্রশংসিত হয়েছে। হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও হবে। তবে বাঙালিদের মনে সত্যজিতের এই পথের পাঁচালি দৃশ্যায়ন কোনও মহাকাব্যের থেকে কম নয়। তথ্য প্রযুক্তিহীন এক দেশের মানুষ হয়েও জীবনের গল্পকে তিনি যেমন করে তুলে ধরতে পেরেছিলেন তিনি সে আর কে পারত; সত্যজিৎ ছাড়া। অপু-দুর্গার শরীরে তিনি প্রত্যন্ত বাংলার গ্রাম্য জীবন এমনভাবে লেপে দিয়েছেন যার সোঁদা গন্ধ আজও খুঁজে পাই আমরা। তারসঙ্গে সর্বজয়া, হরিহরও টিকে আছে জীবন্ত চরিত্রে। বেঁচে আছে শত অভাবের পরেও ভালোবাসার মহাত্ম।বাংলা চলচ্চিত্রের মাইলস্টোন ‘পথের পাঁচালি’র ষাট বছর পূর্তিতে বিনম্র শদ্ধায় স্মরণ করছি মহান শিল্পী সত্যজিৎ রায়কে। এলএ
Advertisement