কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় প্রেম নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রেমিককে মেরে ফেললেন প্রেমিকা। ‘ব্রেকআপ’ না মানায় প্রেমিক আরিফকে (২১) বাসায় ডেকে ব্যাপক মারধর করেন প্রেমিকা ও তার বন্ধুরা।
Advertisement
পরে আরিফকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরিফ। নিহত আরিফ চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের আব্দুল কাদির খোকনের ছেলে এবং স্থানীয় মুন্সীরহাট প্রকৌশলী ওয়াহিদুর রহমান ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
মঙ্গলবার কুমেক হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। আরিফের মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রেমিকা লিমা ও তার পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কলেজছাত্র আরিফের সঙ্গে তিন বছর ধরে একই উপজেলার বারাইশ পশ্চিম পাড়া গ্রামের সফিকুর রহমানের মেয়ে লিমা আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
Advertisement
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লিমা মোবাইল ফোনে আরিফকে তাদের বাড়িতে যেতে বলেন। প্রেমিকার ডাকে সাড়া দিয়ে লিমার বাড়িতে যান আরিফ। সেখানে প্রেমিকা ও তার বন্ধুরা আরিফের মাথায় গুরুতর আঘাত করেন।
খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাকে প্রথমে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাকে ঢাকার ধানমন্ডি নর্দান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার তার মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে বাদ আছর জানাজার পর আরিফের মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহতের চাচা রবিউল বলেন, আরিফ-লিমার প্রেমের সম্পর্ক জানতে পেরে গত ৫-৬ মাস আগে লিমার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায় আরিফের মা। কিন্তু লিমার বাবা আরিফের পরিবারের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পরিবারের চাপে লিমাও আরিফের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টানে। কিন্তু সম্পর্কের ইতি মানেনি আরিফ। কিছুদিন আগে অন্য জায়গা থেকে লিমার বিয়ের প্রস্তাব আসলে অজ্ঞাত কারণে বিয়ে ভেঙে যায়। বিয়ে না হওয়ার জন্য আরিফকে দায়ী করে লিমার পরিবার বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছিল।
Advertisement
তবে স্থানীয় সূত্র জানায়, কিছুদিন আগে লিমা আক্তার মেহেদি নামের এক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এ কারণে পরিবারের পছন্দের কাউকে বিয়েতে রাজি হচ্ছিল না লিমা। খবর পেয়ে আরিফ নতুন প্রেমিক মেহেদিকে লিমার সঙ্গে সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দেয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে লিমা আক্তার ও মেহেদি পরিকল্পিতভাবে বৃহস্পতিবার রাতে আরিফকে মোবাইলে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে আহত করে।
চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের ওসি (অপারেশন) ত্রিনাথ সাহা বলেন, প্রেমঘটিত কারণে আরিফকে হত্যার খবর পেয়েছি। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ময়নাতদন্তের জন্য আরিফের মরদেহ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠাই। এ ঘটনায় জড়িত প্রেমিকা ও তার প্রেমিক এবং পরিবার পালিয়ে গেছে। আরিফের পরিবারের মামলার প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মো. কামাল উদ্দিন/এএম/এমএস