জাতীয়

রিক্ততা ভুলে ফাগুন বরণে সেজেছে প্রকৃতি

ক্যালেন্ডারের পাতায় মাঘ মাসের শেষ দিন আজ। আগামীকালের সূর্য নিয়ে আসবে ফাগুন সকাল। এইতো ক’দিন আগেও শীতের দাপটে কেমন জবুথবু ছিল সারাদেশ। তবে শীতের রিক্ততা ভুলে আবহমান বাংলার প্রকৃতিতে আসতে শুরু করেছে ফাগুনের ছোঁয়া। ঝলমলে রোদের দেখাও মিলছে, বইছে ফাল্গুনী হাওয়া।

Advertisement

শীতের শেষ ও বসন্ত শুরুর মাঝামাঝি সময়ই প্রকৃতি নিজেকে পাল্টে নেয়ার প্রস্তুতি নেয়। এ সময় থেকেই গাছে গাছে ফুলের মুকুল দেখা দেয়। ধূসর কুয়াশা সরে গিয়ে বাগানজুড়ে খেলা করে সোনারোদ। সেইসঙ্গে ঋতুরাজের রাজসভায় আগমন ঘটে রঙিন সব ফুলের। মাত্র একটি দিন, তারপরই গায়ে পরশ বুলাবে বাসন্তী ছোঁয়া। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সবাই সাদরে বরণ করবে ঋতুরাজ বসন্তকে।

সেই খুশিতে গাছে গাছে ফুটছে হরেক রকম ফুল। চট্টগ্রাম নগরের সিডিএ ভবন চত্বর, ওয়ার সিমেট্রি, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ লাইন্স, ডিসি হিল-লালদিঘী পাড়ের নার্সারিগুলো ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে শোভা পাচ্ছে গাঁদা, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, কসমসসহ নানা ফুল। ফুটেছে ডায়ান্থাস, পিটুনিয়া, সিলভিয়া, ইনকা গাঁদা, চায়নিজ গাঁদার মতো নাম না জানা নানা বর্ণের ফুল।

বন্দরনগরীর আমগাছে মুকুল এসেছে আরও আগে। পলাশ, শিমুল, কৃষ্ণচূড়াসহ ফাগুনের নানা ফুলের কলিরও দেখা মিলছে। শীতে ঝরে পড়া পাতার ফাঁকা জায়গা পূরণ করতে গাছে গাছে আবার গজাতে শুরু করেছে নতুন পাতা।

Advertisement

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্রের আবহাওয়াবিদ মাজহারুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে শেষ থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হতে শুরু করেছে। এ সপ্তাহে তা আরও দ্রুত হচ্ছে। গত সপ্তাহে গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু আজ (মঙ্গলবার) হঠাৎ তা ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে এসেছে। সাধারণতো মাঘের শেষদিকে শীতের তীব্রতা কমলেও রেশটা থেকে যায়। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে চট্টগ্রামে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এরপরই তাপমাত্রা স্বাভাবিক হতে শুরু করবে।

পতেঙ্গা আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্র সূত্র জানায়, গতকাল সোমবার বন্দরনগরীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে এক সপ্তাহ আগেও নগরীর জহুর হকার্সসহ বিভিন্ন স্থানে শীতবস্ত্রের দোকানগুলো সরগরম থাকলেও এখন তা নেই। রাস্তার পাশে গরম কাপড় নিয়ে হকারদের হাঁকডাকও কমে গেছে। বড় বড় শপিংমলেও দেয়া হচ্ছে শীতের পোশাকের ওপর বিশেষ মূল্যছাড়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিউমার্কেট এলাকার শীতবস্ত্র বিক্রেতা মিনহাজুল জানান, শীতকে সামনে রেখে জ্যাকেট, ব্লেজার, মাফলারসহ নানা ধরনের গরম পোশাক এনেছিলেন। এসবের বেশ কিছু এখনও বিক্রি হয়নি। নতুন পোশাক আনার আগে যাতে এগুলো শেষ হয়ে যায়, তাই এ মূল্যছাড় দেয়া হয়েছে।

Advertisement

তবে শহরে শীতের তীব্রতা কমলেও গ্রামে এখনও বেশ অনুভব হচ্ছে। কর্ণফুলি নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়ছে।

এনডিএস/এমএস