প্রায় ২০ দিন ধরে মিয়ানমার থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে সব ধরনের আমদানি বন্ধ রয়েছে। মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে গবাদি পশু আমদানি বন্ধ থাকায় স্থানীয় বাজারে মাংসের সংকট দেখা দিয়েছে। দামও বেড়েছে।
Advertisement
টেকনাফ শুল্ক বিভাগ জানায়, গত ২৩ জানুয়ারি থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ করিডোরে পশু আমদানি বন্ধ রয়েছে। চলতি বছর ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত ৩ হাজার ৩৯১টি গরু, ৪৪০টি মহিষ আমদানি করে ১৯ লাখ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা রাজস্ব আদায় হয়। এরপর থেকে করিডোরে কোনো ধরনের গবাদিপশু আসেনি। চোরাইপথে গবাদিপশু আসা রোধে ২০০৩ সালে ২৫ মে শাহপরীর দ্বীপ করিডোর চালু করা হয়। করিডোর দিয়ে আসা গরু-মহিষ প্রতি ৫০০ এবং ছাগল থেকে ২০০ টাকা হারে রাজস্ব আদায় করা হয়। বিজিবি ও শুল্ক বিভাগের তত্ত্বাবধানে সোনালী ব্যাংকে রাজস্ব জমা পড়ে।
টেকনাফ উপজেলা পশু আমদানিকারক সমিতির সভাপতি ও প্যানেল মেয়র আবদুল্লাহ মনির বলেন, মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার কারণে সে দেশের ব্যবসায়ীরা রফতানি নিরাপদ মনে করছেন না। অভ্যন্তরীণ সমস্যায় সীমান্তে নিরাপত্তা কড়াকড়ি করা হয়। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাই চাহিদা পাঠানোর পরও সেদেশের ব্যবসায়ীরা পশু পাঠাচ্ছেন না। তাই গত ২০ দিন ধরে পশু আমদানি বন্ধ রয়েছে। ফলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছন ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা।
আরেক পশু ব্যবসায়ী মো. শরীফ বলেন, দেশে গবাদি পশুর চাহিদা পূরণে মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি করা হয়। বর্তমানে পশু না আসায় এপারে গবাদি পশুর চাহিদা ও দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
Advertisement
ব্যবসায়ীরা জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে টেকনাফ সীমান্তে বাণিজ্যিক পণ্য আমদানিতেও প্রভাব পড়ছে। মিয়ানমার থেকে প্রতিমাসে বিপুল পরিমাণ কাঠ আমদানি হয়। গত তিন সপ্তাহ বন্দরে কাঠ আমদানি বন্ধ। গত জানুয়ারি মাসে স্থলবন্দরে কাঠ আমদানি করে সরকার ২ কোটি ৭২ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করে। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে এ পর্যন্ত ৩০ লাখ টাকা মত রাজস্ব আয় হয় বলে জানায় শুল্ক বিভাগ।
সূত্র জানায়, জানুয়ারি মাসে টেকনাফ শুল্ক স্টেশন রাজস্ব আদায় করেছে ২২ কোটি ১০ লাখ টাকা। সে মাসে টার্গেট ছিল ১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। টার্গেটের চেয়ে ৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে রাজস্বের টার্গেট পূরণ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে বলে জানায় বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা শংকর কুমার দাশ বলেন, পশুর করিডোর থেকে সরকার প্রতি বছর কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে আসছে। স্থানীয় প্রশাসন ও পশু ব্যবসায়ীদের সহায়তায় তা সম্ভব হয়। গত জানুয়ারি মাসের শেষে মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে গবাদি পশু আসা বন্ধ রয়েছে। শুধু গবাদি পশু ও কাঠ নয়, আমদানি-রফতানি সব ধরণের পণ্যতে এর প্রভাব পড়েছে। এতে চলতি মাসে রাজস্ব আদায়ের টার্গেট পূরণ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন ।
সায়ীদ আলমগীর/আরএআর/এমকেএইচ
Advertisement