শিক্ষা

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরে প্রধান প্রকৌশলীর ‘নৈরাজ্য’

>> আমার ভাই-ভাতিজা কী তাহলে ব্যবসা করবে না : হানজালা>> ১৩ প্রকৌশলীর পেনশন আটকা >> সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন প্রধান প্রকৌশলী

Advertisement

হঠাৎ মুক্তিযোদ্ধা সেজে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের (ইইডি) প্রধান প্রকৌশলীর পদ রীতিমতো আঁকড়ে আছেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে একবছর এবং পরে তদবিরের জোরে তিনি চুক্তিভিত্তিক আরও তিনবছর চাকরিসহ চার বছরের মেয়াদ বাড়িয়ে নিয়েছেন। এ প্রক্রিয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো নির্মাণ কাজের এ প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদটি একপ্রকার করায়ত্ত করে নেন তিনি। তার নাম দেওয়ান মোহাম্মদ হানজালা।

প্রতিষ্ঠানটি একপ্রকার পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন তিনি! নামে-বেনামে তার ভাইসহ অন্যান্যদের মাধ্যমে বিভিন্ন নির্মাণ কাজ করানোর অভিযোগ উঠে। তার পরিবারের বেশ কয়েক সদস্য এ প্রতিষ্ঠানে ঠিকাদারি করেন। এ ছাড়া কাজ নিয়ে নানান ধরনের অনিয়মের অভিযোগও আছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন (২০১৪-১৮) প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই প্রকৌশলী প্রতিষ্ঠানটিতে সর্বেসর্বায় পরিণত হন। ২০১০ সালে মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাদের চাকরির বয়স দুইবছর বৃদ্ধি করে অবসরের বয়স ৫৯ করে সরকার। পরে ২০১৩ সালে আরও একবছর বাড়িয়ে ৬০ করা হয়। ২০১০ সালে চাকরির বয়স বৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্তের পরই হঠাৎ মুক্তিযোদ্ধায় পরিণত হন নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান হানজালা। ২০১১ সালে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা ঘোষণা করেন এই প্রকৌশলী। অথচ ১৯৮১ সালে চাকরিতে যোগদানকালে এ ধরনের কোনো কাগজপত্র জমা দেননি তিনি। তার এই মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার ইস্যু নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান আছে।

Advertisement

সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে নিয়মিত চাকরির মেয়াদ শেষ হলে কথিত মুক্তিযোদ্ধার সনদ দিয়ে তিনি চাকরির মেয়াদ প্রথমে এক বছর বৃদ্ধি করিয়ে নেন। পরবর্তীতে একই পদ্ধতিতে নিজের এক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রথমে একবছর ও পরে দুই বছরের জন্য তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নেন।

কথিত আছে, শিক্ষার তৎকালীন এক শীর্ষ ব্যক্তি রহস্যজনক কারণে ফাইল হাতে করে নিয়ে গিয়ে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়কে ম্যানেজ করে তার চাকরির বয়স বাড়িয়ে আনেন। গত বছরের ১৭ জুলাই তার সেই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ আরো এক বছরের জন্য বাড়িয়ে দেয়া হয়।

অভিযোগ আছে, এরপর বেপরোয়া হয়ে উঠেন এই প্রকৌশলী। গড়ে তোলেন একটি সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেটে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের দফতরের ও প্রধান প্রকৌশলীর পরিবারের ৩-৪ জন ব্যক্তি রয়েছেন।

ফলে ইইডিতে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ উঠতে থাকে। ইইডি সংশ্লিষ্টরা জানান, বিভিন্ন নির্মাণ কাজ উল্লিখিত সিন্ডিকেটের সদস্যদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তির মাধ্যমেই রফা হয়ে থাকে। ওই ব্যক্তি প্রধান প্রকৌশলীর ভাই আবদুল হাই। এই ব্যক্তিকে কখনো নামে আবার কখনো বেনামে কাজ দেয়া হয়েছে।

Advertisement

এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল) বলেন, প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজের অনিয়মের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আমি তাকে (প্রধান প্রকৌশলী) ডেকেছিলাম। তার কাছে জানতে চেয়েছি। পরে এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিবের সমন্বয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বোঝা যাবে সেখানে (জগন্নাথে) কী ধরনের অনিয়ম হয়েছে।

তিনি বলেন, দুর্নীতি যেই করুন তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। মৌখিক অভিযোগ পেয়ে আমরা কারোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারি না। বিধান মেনে সব কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। কারোর বিরুদ্ধে আমরা তথ্য-প্রমাণসহ অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেউ যদি ভুক্তভোগী হয়ে থাকেন, তবে আমাদের কাছে এলে তা গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হবে।

উল্লেখ্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভৌত-অবকাঠামো উন্নয়ন, নতুন ভবন নির্মাণ, পুনঃনির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও সংস্কারসহ আসবাবপত্র সরবরাহের মতো বিষয়গুলো এই অধিদফতরের দায়িত্বে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই এসব কাজে দুর্নীতির অভিযোগ আছে। কিন্তু ২০১৪ সালের পর অভিযোগ আরও তীব্র হয়। বিভিন্ন অভিযোগের একটি হলো- অবৈধ উপায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও সংস্কারের কার্যাদেশ নিয়ে রীতিমতো পুকুরচুরি। ইইডির শুধু ঢাকা মেট্রো জোনের ২০১৭ সালের জুন মাসের ১০৮টি কাজ পর্যালোচনা করে বিভিন্ন অনিয়মের চিত্র পাওয়া যায়। এর মধ্যে দু-চারটি নতুন নির্মাণের কার্যাদেশ ছাড়া বাকি সবই ছিল মেরামত ও সংস্কার সংক্রান্ত।

আবার সাধারণত মেরামত ও সংস্কার কাজে প্রতিটিতে বরাদ্দ থাকার কথা ৩-৫ লাখ টাকা। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে, অনেক কাজেই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১০ লাখ টাকার বেশি। এটা ইইডির ইতিহাসে বিরল বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে সৃষ্টি হয়ে নানান প্রশ্ন। শুধু মেট্রো জোনেই নয়, ইইডির সারাদেশের কার্যক্রমেই একই চিত্র বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। নামে-বেনামে এসব কাজ বাগিয়ে নেন প্রধান প্রকৌশলী পরিবারের একাধিক সদস্যসহ উল্লিখিত সিন্ডিকেটের ঘনিষ্ঠজনরা।

জানা গেছে, প্রধান প্রকৌশলীর ভাই আবদুল হাই নিজের প্রতিষ্ঠান পদ্মা কনস্ট্রাকশন ছাড়াও স্ত্রীর প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফিরোজা এন্টারপ্রাইজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে কাজ নিয়েছেন।

তবে এ ক্ষেত্রে কিছুটা কৌশল খাটিয়েছেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠানের নামে নিয়েছেন ছোটখাটো কাজ। অন্যদিকে বড় কাজগুলো নিয়েছেন নিজের স্ত্রী এবং বন্ধু-বান্ধবদের প্রতিষ্ঠানের নামে। যাতে সরকারি কাজে পরিবারিকীকরণ প্রমাণিত না হয়, সে কারণে এমন কৌশলের আশ্রয় নেয়া হয়েছে।

তবে এরপরও অপকর্ম হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় বলে জানা গেছে। আজিমপুরের গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের একটি নির্মাণ কাজের টেন্ডারে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছিল ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার। ঠিকাদার আবদুল হাইয়ের বন্ধুর প্রতিষ্ঠান মেসার্স শামস এন্টারপ্রাইজের নামে কার্যাদেশটি দেয়া হয়েছিল। ২০১৭ সালের ২৫ জুন এই প্রতিষ্ঠানকে ৬৫ লাখ টাকার বিল পরিশোধ করা হয়। এর তিন দিন পর ২৯ জুন একই কাজের জন্য আরও ৩৫ লাখ টাকার বিল পরিশোধ করা হয়। তিন দিনের মাথায় নতুন করে এই বিল পরিশোধের ঘটনায় নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, ইডেন কলেজ সম্প্রসারণ বাবদ ২ কোটি ১৭ লাখ ৫ হাজার ৫১৩ টাকার কার্যাদেশ এবং গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের ৪ তলা হোস্টেল ভবনের টয়লেট-স্যুয়ারেজ মেরামত-সংস্কার বাবদ ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৮৬৪ টাকার কার্যাদেশ পায় মেসার্স ফিরোজা এন্টারপ্রাইজ। এই প্রতিষ্ঠানটি আবদুল হাইয়ের স্ত্রীর বলে জানা গেছে। টেকনিক্যাল টিচার্স ট্রেনিং কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনের বৈদ্যুতিক বিতরণ লাইনের মেরামত বাবদ ১০ লাখ ৮৯ হাজার ৯২৭ টাকার কাজ বন্ধুর প্রতিষ্ঠান মেসার্স শামস এন্টারপ্রাইজের নামে নিয়ে আবদুল হাই নিজেই তা করেছেন।

গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের ৩ তলা হোস্টেলের টয়লেটগুলোর পানির লাইন ও স্যুয়ারেজ মেরামত-সংস্কার বাবদ ১৫ লাখ ৩৬ হাজার ২৯ টাকার কার্যাদেশ দেয়া হয় আবদুল হাইয়ের শ্যালকের প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফয়সাল এন্টারপ্রাইজের নামে। সরকারি বিজ্ঞান কলেজ প্রধান শিক্ষকের কক্ষ সংলগ্ন স্টোর রুমের সম্প্রসারণ কাজ (১৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকার), গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ ৩ তলা শিক্ষক কোয়ার্টারের মেরামত ও সংস্কার কাজসহ (১৪ লাখ ৯১ হাজার টাকার) ৪টি কাজ পেয়েছে মেসার্স সপ্তদীপা সংসদ। এই প্রতিষ্ঠানটির মালিক আবদুল হক, যিনি প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মো. হানজালার আপন খালাতো ভাই। হানজালার বাসায়ই তিনি বসবাস করেন বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ, ধানমন্ডি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের উভয় ব্লকের ছাদের জলছাদ ও সংস্কার কাজ, ধানমন্ডি গার্লস স্কুল- উত্তর ব্লকের মেরামত কাজ এবং ধানমন্ডি গার্লস স্কুল- নামাজ রুমের মেরামত কাজ পেয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী হানজালার আরেক খালাতো ভাই গোলাম মোস্তফার প্রতিষ্ঠান মেসার্স জিএম এন্টারপ্রাইজ। ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট- দক্ষিণ গেট মেরামত ও সংস্কার কাজ (৯ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪ টাকার) পেয়েছে হানজালার আপন বড় ভাইয়ের প্রতিষ্ঠান মেসার্স আব্দুল্লাহ এন্টারপ্রাইজ। হানজালার ছোট ভাই আবদুল হাইয়ের বন্ধুর প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাফিদ ইন্টারন্যাশনাল ইডেন মহিলা কলেজের ৬টি আলাদা বড় কাজ পেয়েছেন, যার ৫টিই মেরামত ও সংস্কার সংক্রান্ত। এ কাজগুলো বন্ধুর প্রতিষ্ঠানের নামে নেয়া হলেও কাজের মালিকানা আসলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী হানজালার ভাই আবদুল হাইয়ের নিজেরই।

ঢাকা জোনের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মির্জা নজরুল ইসলামের আপন ভাই মির্জা আমিনুল ইসলাম পেয়েছেন ৪টি মেরামত ও সংস্কার কাজ। সংশ্লিষ্টমহলের অভিযোগ, টেন্ডারে ম্যানিপুলেট করা না হলে কোনো ক্রমেই একটি প্রতিষ্ঠান এতোগুলো কাজ পাওয়া সম্ভব নয়। নির্বাহী প্রকৌশলী ছাড়াও এই ম্যানিপুলেশনের সঙ্গে প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ হানজালা সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ আছে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ হানজালা বলেন, আমার ভাই-ভাতিজা কী তাহলে ব্যবসা করবে না? তিনি দাবি করেন, সবগুলো কাজই নিয়ম-মাফিক হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এসব বিষয় তদন্ত করা হচ্ছে। একটি মহল আমার সুনাম নষ্ট করতে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, দরপত্র কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে, তাই আমার ভাই বা পরিচিত কাউকে দরপত্র পাইয়ে দেয়া আমার হাতে নেই, জবির দরপত্র আমার আগের প্রধান প্রকৌশলী করেছেন। তাই অর্থ লুটপাট হলে তার দায়িত্ব আমি নেব না। আমি যদি অপরাধী হই, তবে তদন্ত করে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আমার কোনো আপত্তি নেই। তবে তদন্ত ছাড়া আমার বিরুদ্ধে কোনো দোষ চাপিয়ে দেয়া যাবে না।

জানা গেছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের ৪৫ কোটি ২৪ লাখ ১৬ হাজার ৩৬৭ টাকার নির্মাণ কাজ দেয়া হয়েছে ‘দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী হলেন ঢাকা কলেজের সাবেক ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ও যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা জুলফিকার ভুট্ট। এই প্রতিষ্ঠানকে লাভবান করিয়ে দিতে আরও কৌশলের আশ্রয় নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, ২০তলা ভিতের ভবনের ১৫তলা করার কার্যাদেশ দেয়া হলেও রহস্যজনক কারণে পরে তা ১৩ তলা করার অনুমতি দেয়া। কিন্তু দুটি ফ্লোর কমানো হলেও সেই হারে বাজেট কাটা হয়নি। এ ক্ষেত্রে অনেক কম অর্থ কাটা হয়েছে। এতে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, কেবল উল্লিখিত কাজগুলোই নয়, ইইডির গত ১০ বছরের বিভিন্ন নির্মাণ ও সংস্কার কাজের ব্যাপারে তদন্ত হলে সব অনিয়ম বেরিয়ে আসবে। বিশেষ করে উন্নয়ন কাজে কমিশন বাণিজ্য, সর্বনিম্ন দরদাতাকে জোরপূর্বক টেন্ডার প্রত্যাহার করানো, প্রকল্প পিছিয়ে বাজেট বাড়ানো, নির্মাণকাজে অবহেলা, ভুতুড়ে কাজের নামে বিল ও ভুয়া ভাউচার তৈরি করে সরকারি অর্থ আত্মসাতসহ নানা অনিয়ম বেরি আসবে।

১৩ প্রকৌশলীর পেনশন আটকা

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর থেকে অবসরপ্রাপ্ত ১৩ জন প্রকৌশলীর পেনশন ও আনুতোষিক ভাতাও আটকে দিয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মো. হানজালা। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেছেন, নিয়ম-বহির্ভূতভাবে আটকে রাখা হয়েছে তাদের পেনশন ও আনুতোষিক ভাতা।

চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী বরাবর এবং ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট বরাবর আলাদা দুটি অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী প্রকৌশলীরা।

পেনশন সহজীকরণ বিধি মোতাবেক একজন সহকারী কর্মকর্তা অবসরে যাওয়ার এক মাসের মধ্যে তাকে পেনশন ও আনুতোষিকের ৮০ শতাংশ ভাতা প্রদান করতে হয়। কোনো জটিলতা থাকলে আনুতোষিকের বাকি ২০ শতাংশ ভাতা জটিলতা শেষে প্রদান করা হয়।

এমএইচএম/জেডএ/এমকেএইচ