প্রবাস

এতিমদের মুখে হাসি ফোটালেন ওমানপ্রবাসী

ফেনীর ঐতিহ্যবাহী রঘুনাথপুর মাদরাসার এতিম শিক্ষার্থীদের নতুন পোশাক দিয়ে মুখে হাসি ফুটিয়েছেন ওমানপ্রবাসী মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম। সম্প্রতি তিনি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এসব শিক্ষার্থীদের মাঝে ২০০ পিস পোশাক বিতরণ করেন।

Advertisement

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাদরাসার পরিচালক মাওলানা মুহাম্মাদ সালাউদ্দীন ও স্থানীয় ব্যক্তিরা।

উপজেলার রঘুনাথপুর দারুল উলুম মহিউচ্ছুন্নাহ মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রতিবছর পোশাক প্রদান করা হয়। নতুন পোশাক পেয়ে বেশ খুশি শিক্ষার্থীরা।

উল্লেখ্য, শহীদুলের প্রবাস জীবনের শুরুটা বাধার মধ্য দিয়ে। খুব অল্প বয়সে বিদেশ আসার কারণে ওমানে পড়েছেন হাজারো সমস্যায়। এই ছোট্ট ছেলেটিই একদিন ওমানের সফল বাংলাদেশি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে তা কেউ চিন্তাও করতে পারেনি।

Advertisement

তার দুই ভাই ওমানে আগে থেকেই ব্যবসা করছেন, সেই হিসেবে অল্প বয়সেই ভিসা দিয়ে নিয়ে আসেন ছোট ভাই শহীদুল ইসলামকে। ওমানে আসার তিন বছর পর ২০০৫ সালে শুরু করেন ব্যবসা, মাস্কাটের নিকটবর্তী শহর বারকাহতে দেয় বালিশের ফ্যাক্টরি, দুর্ভাগ্যবসৎ ব্যবসা শুরুর দুই বছর পর ২০০৭ সালে ভয়াবহ সাইক্লোনে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়, প্রায় দেড় কোটি টাকার লোকসান হওয়ার পরেও পুনরায় ব্যবসায় মনোযোগ দেন।

এরপর দীর্ঘ ৮ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে পূর্বের ক্ষতি কাটাতে না কাটাতেই ২০১৬ সালে আবার আগুন লেগে সমস্ত ফ্যাক্টরি ধ্বংস হয়ে যায়। এরপরেও থেমে থাকেনি শহীদুল। পরে দেশ থেকে স্ত্রীর গহনা বিক্রি ও শেষ সম্বল জমি জায়গা বিক্রি করে আবার ব্যবসা শুরু করে।

বর্তমানে ওমানের বিখ্যাত সব হাইপার মার্কেটগুলোতে তার কোম্পানির বালিশ দেখা যায়। এ ছাড়াও ছোট-বড় অনেক হোলসেল দোকানেও তার পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, পরিচিতি রয়েছে পুরো ওমানজুড়েই।

দেশটিতে দুই মেয়ের নামে ‘আল সাইমা ও আল সাইফা’ ব্রান্ড প্রতিষ্ঠিত করেছেন। উৎপাদিত পণ্যের ভেতর উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কুলিং ফাইবার বালিশ, বাংলাদেশি মূল্যে প্রায় ৩৫০০ টাকা। এই বালিশগুলো ওমান ও কাতারের বিভিন্ন ফাইভ স্টার হোটেলে সাপ্লাই দেয়া হয়।

Advertisement

এ ছাড়াও ওমানি মজলিস তাকিয়া, কমফোর্টার, সোফা সেট, বেডশিট ও করটন্স ইত্যাদি তৈরি করে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন দেশটিতে।

ইতোমধ্যে তিনি ওমানে প্রতিষ্ঠিত করেছেন নিজের একটি ফ্যাক্টরিসহ ৪টি সুপারশপ। এ ছাড়াও শিগগিরই কাতারেও একটি ফ্যাক্টরি ওপেন করতে যাচ্ছেন। তার কোম্পানিতে বাংলাদেশি শ্রমিক ছাড়াও প্রায় ৪০ জন শ্রমিক কর্মরত রয়েছে।

এমআরএম/এমকেএইচ