বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধীনে দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থায়নে এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল ভবন নির্মাণের জন্য ফাউন্ডেশনসহ এর কংক্রিট ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। শনিবার সকালে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া পিলারে কংক্রিট ঢেলে নির্মাণ কার্যক্রমের সূচনা করেন। ১৩ তলাবিশিষ্ট এ হাসপাতালের আয়তন প্রায় ৫০ হাজার স্কয়ার মিটার। গত বছরের (২০১৮) জুলাই থেকে ৩০ মাসের মধ্যে এই নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
Advertisement
সকালে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জুলফিকার রহমান খান, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হুন্দাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির ম্যানেজার ডে ইয়ং লি, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সানজিনের পরামর্শক জাংগ হো বিন, প্রকল্পের উপ-পরিচালক সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. নূর-ই এলাহী প্রমুখ।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া জানান, গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দক্ষিণ কোরিয়ার ইডিসিএফের অর্থায়নে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের ভিত্তিরপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, উন্নত ও আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসাসেবার প্রতি মানুষের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই বাস্তবতায় সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ যথার্থ ও অত্যন্ত সময়োপযোগী। বাংলাদেশে এ ধরনের হাসপাতাল এটাই প্রথম। দেশে প্রথম সেন্টার বেইজড চিকিৎসাসেবা চালু হবে এ হাসপাতালটিতে। বর্তমানে বিশ্বের অধিকাংশ উন্নত দেশে সেন্টার বেইজড চিকিৎসাসেবা পদ্ধতির মাধ্যমে এ ধরনের বিশেষায়িত চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
Advertisement
অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, এ হাসপাতাল ভবনের প্রথম ফেজে থাকবে স্পেশালাইজড অটিজম সেন্টারসহ ম্যাটারনাল অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ কেয়ার সেন্টার, ইমার্জেন্সি মেডিকেল কেয়ার সেন্টারসহ অন্যান্য সেন্টার। দ্বিতীয় ফেজে থাকবে জেনারেল সার্জারি, অফথালমোলজি/ডেন্টিস্ট্রি/ডার্মাটোলজি সেন্টারসহ অন্যান্য সেন্টার। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ হাসপাতালে রাখা হয়েছে রোগীবান্ধব সবুজ উদ্যানসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধা। সুপরিসর হাসপাতালে বহির্বিভাগ ও ইনফো ডেস্ক থাকবে রোগীদের যথাযথ নির্দেশনা প্রদানের জন্য।
তিনি বলেন, হাসপাতাল ইনফরমেশন সেন্টার চালু করার মাধ্যমে রোগী ও হাসপাতাল পরিচালনা হবে সম্পূর্ণ ডিজিটাল। রোগ নির্ণয়ের সর্বাধুনিক সুবিধাসহ থাকবে লিভার ও কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট সুবিধা। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। এখানে প্রতিদিন বহির্বিভাগে সেবা গ্রহণ করবে দুই হাজার থেকে চার হাজার রোগী। হাসপাতালের অন্তঃবিভাগে প্রতিবছর প্রায় ২২ হাজার রোগী স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করবে। প্রতিবছর দেশের বাইরে চলে যাওয়া ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রতিষ্ঠিত সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি “বিদেশ নয়, দেশেই সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা” এর যথাযথ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। চিকিৎসাসেবা মানুষের মৌলিক অধিকার সংবিধানের এই স্বীকৃত বাণী বাস্তবায়নে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এমইউ/বিএ/জেআইএম
Advertisement